যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি: উপসাগরীয় দেশগুলোর ভূখণ্ড ব্যবহার করে ইরানে হামলা নয়

যে কোনো মুহূর্তে ইসরায়েলে হামলা চালাতে পারে ইরান। এর পরিপ্রেক্ষিতে জবাব দিতে গিয়ে উপসাগরীয় এলাকায় অবস্থিত মার্কিন কোনো ঘাঁটি ব্যবহার না করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো। খবর মিডল ইস্ট মনিটর।

উপসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন ঘাঁটি

নাম-পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিনিয়র মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের উপসাগরীয় অঞ্চলের মিত্ররা তাদের ভূখণ্ডে থাকা মার্কিন ঘাঁটি থেকে ইরান কিংবা তাদের প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোর ওপর হামলা না চালাতে বলেছে।

ইসরায়েল-হামাস-হিজবুল্লাহ-ইরানকে ঘিরে আঞ্চলিক উত্তেজনা ক্রমেই তীব্র হতে থাকায় উপসাগরীয় অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিগুলো নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কুয়েতসহ বেশ কয়েকটি তেল-সমৃদ্ধ দেশে থাকা এসব নৌ ও বিমানঘাঁটিতে অন্তত ৪০ হাজার মার্কিন সৈন্য অবস্থান করছে।

মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সেনা

জানা গেছে, সৌদি আরবের প্রিন্স সুলতান বিমানঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭৬তম এয়ার এক্সপেডিশনারি উইং রয়েছে। এখান থেকে এফ-১৬ ও এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিভিন্ন অভিযানে অংশ নেয়। সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল ধাফরা বিমানঘাঁটিতে এমকিউ-৯ রিপার ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান রয়েছে। কুয়েতের আলি আল-সালেম বিমান ঘাঁটিতে ৩৮৬তম এয়ার এক্সপিটিশনারি উইং রয়েছে। কাতারের এআই উদিদ বিমানঘাঁটিতে রয়েছে ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ডের আঞ্চলিক সদরদপ্তর। বাহরাইনে রয়েছে ইউএস নেভাল ফোর্সেস সেন্ট্রাল কমান্ড এবং ইউএস ফিফথ ফ্লিটের সদরদপ্তর। এছাড়া সেখানে প্রায় নয় হাজার মার্কিন সৈন্য অবস্থান করছে। ওমানেও সামরিক ওভারফ্লাইট পরিচালনা করে যুক্তরাষ্ট্র।

এসব ঘাঁটিতে দশকের পর দশক ধরে বিনিয়োগ করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের খুব কাছে হওয়ায় এগুলো থেকে সহজেই যুক্তরাষ্ট্র সেখানে হামলা চালাতে পারবে। কিন্তু এ ব্যাপারে উপসাগরীয় দেশগুলোর আপত্তি বাইডেন প্রশাসনকে অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছে।

বাইডেন প্রশাসনসহ বর্তমান ও সাবেক মার্কিন কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন, ইসরায়েলের ওপর ইরানি হামলা অত্যাসন্ন। এক্ষেত্রে ইরান সরাসরি ইসরায়েলে হামলা চালাতে পারে। অথবা বিকল্প হিসেবে তাদের প্রক্সি অর্থাৎ ইরানের শিয়া মিলিশিয়া, ইয়েমেনের হুথি বা লেবাননের হিজবুল্লাহর মাধ্যমে হামলা চালাতে পারে। অথবা ইরান ও প্রক্সি মিলে সমন্বিত হামলা চালাতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র আশঙ্কা করছে, বহুমুখী হামলা হলে ইসরায়েলের আয়রন ডোম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে।

এছাড়া ইরান সরাসরি ইসরায়েলে হামলা না চালিয়ে বিভিন্ন দেশে ইসরাইলি দূতাবাসেও হামলা চালাতে পারে কিংবা পশ্চিম তীর বা গাজায় অভিযান চালানো ইসরায়েলি সৈন্যদের ওপর হামলা চালাতে পারে। সব মিলিয়ে ইরানের হামলা নিশ্চিত ধরে নিলেও কিভাবে তারা হামলা চালাবে তা নিয়ে দ্বিধায় রয়েছে ইসরায়েল ও মার্কিন প্রশাসন। তবে হামলা যেমনই হোক, ইসরায়েলের নিরাপত্তায় যুক্তরাষ্ট্র সব সময় পাশে থাকবে বলে আশ্বস্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।