খালেদ মাহমুদ: আমাদের তো ওরকম বেঞ্চ নেই

ওয়ানডে দলে যারা খেলছেন টি-টোয়েন্টি ও টেস্টেও ঘুরে ফিরে তারাই। আন্তর্জাতিক পথ চলার এতদিন পেরিয়ে গেলেও ভিন্ন ভিন্ন ফর্মেটের জন্য আলাদা দল গঠন করতে পারেনি বিসিবি (বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড)। সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে সেই কথাটিই যেন আবার মনে করিয়ে দিলেন বিসিবির পরিচালক ও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন।

খালেদ মাহমুদ সুজন ও সাকিব আল হাসান

সুজন বলছিলেন, ‘আমাদের তো ওরকম বেঞ্চ নেই। যেমন এখন ওপেনিংয়ে অনেকেই ব্যাটিং করছে। কিন্তু আমাদের পরবর্তী টেস্ট ওপেনার কে কে আছে জিজ্ঞেস করলে, আপনি কিন্তু হঠাৎ করে আটকে যাবেন। এটা সহজ নয় বলা। ভারতের কিন্তু ওরা ১০-১২টা নাম বলে দেবে খুব সহজে। আমার মনে হয়, এগুলো চিন্তা করা উচিত।’

বলার অপেক্ষাই রাখে না যে, একটি দলের যে কোন ক্রিকেটারের চেয়ে পেস বোলাররা তুলনামুলক বেশিই ইনজুরি প্রবন হয়ে থাকেন। যেহেতু তাদের রান আপ, ডেলিভারি, রিফ্লেক্স; সবই একজন ব্যাটার কিংবা স্পিনারের চেয়ে তুলনামুলক বেশি কষ্টসাধ্য।  এবং সেই বোলারই যখন কোন টেস্ট ম্যাচে ৩০, ৪০ ওভার বল করেন, তার পরিশ্রমের মাত্রাটা নিঃসন্দেহে অন্য যে কারও চেয়ে বেশি হয়ে থাকে।

এতগুলো ওভারে গতিময় বোলিংয়ের কারণে পেশির টান থেকে শুরু কাঁধ, ব্যাক পেইন, লিগামেন্ট ছিড়ে যাওয়া, কনুই, গোঁড়ালির ইনজুরি, হ্যামস্ট্রিং, আঙ্গুলে কিংবা কব্জিতে ফ্র্যাকচার একজন পেসারের জন্য নিত্তনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়ায়। ফলে ক্রিকেট খেলুড়ে সব দেশেই এখন ভিন্ন ভিন্ন ফর্মেটের জন্য আলাদা দলের দিকে ঝুঁকছে। শুধু ব্যতিক্রম রয়ে গেছে বাংলাদেশ।

বিগত বছরগুলোতে দেখা গেছে তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমানরা তিন ম্যাচ সিরিজের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলেই টেস্ট খেলতে নেমে গেছেন। অর্থাত, নুন্যতম ৮ দিন লম্বা স্পেলে বোলিং করতে হচ্ছে। বিষয়টি তাদের জন্য অবশ্যই ক্লান্তিকর। কেননা এতে করে তাদের ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্ট হয় না বললেই চলে।  ফলে এমন ভয়াভয় এক একটি ইনজুরিকে সঙ্গী করে নিতে হয় যা তাদের বছরের পর বছর মাঠের বাইরে ঠেলে দেয়। বিষয়টি অনুধাবন করেই মোস্তাফিজ, তাসকিন টেস্ট ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাছাড়া দুজনকেই অপারেশন টেবিলে যেতে হয়েছে।

উদাহরণ টানতে খুব বেশি দূর যেতে হবে না। এইতো গেল বছরের জুনে চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে হাঁটুর ইনজুরিতে পড়া এবাদত হোসেন আজও দলে ফিরতে পারেননি। এর ফলে এক দিকে তিনি যেমন আর্থিক ক্ষয়-ক্ষতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন তেমনি দেশও তার পারফরম্যান্স পাচ্ছে না এবং ভবিষ্যতে পেতেও সময় নিবে। কেননা এত লম্বা সময় পর ফিরেই তো আর তিনি নিজের সেরাটি দিতে পারবে না।