ইরানের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক মোহাম্মদ রসুলফকে ৮ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। একইসঙ্গে তাকে চাবুক মারার ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশও দিয়েছে আদালত। তার নির্মিত সিনেমা দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি বিবেচনা করছে ইরানি কর্তৃপক্ষ। খবর সিএনএন ও দ্য গার্ডিয়ানের।

mohammad rasoulofইরানের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক মোহাম্মদ রসুলফ

চলচ্চিত্র পরিচালক রসুলফের পক্ষে আইনী লড়াই চালানো তেহরানের মানবাধিকার আইনজীবী বাবাক পাকনিয়া বুধবার (৮ মে) এক এক্স পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ইরানের পরিচালক মোহাম্মদ রসুলফকে আট বছরের কারাদণ্ড, চাবুক মারা, জরিমানা ও তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আপিল আদালতেই এ রায় চূড়ান্ত হয়েছে।

পাকনিয়া জানান, পরিচালক রসুলফকে শাস্তির প্রধান কারণ হল তার নির্মাণ করা চলচ্চিত্র ও ডকুমেন্টারি। আদালত বলছে, তার এসব চলচ্চিত্র ও প্রামাণ্যচিত্রে দেশের নিরাপত্তার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনের অভিপ্রায়, যোগসাজশপূর্ণ ও অব্যাহত সম্পৃক্ততা রয়েছে।

৫২ বছর বয়সী রসুলফের নির্মিত সর্বশেষ চলচ্চিত্র ‘দ্য সিড অব দ্য স্যাক্রেড ফিগ’ আগামী সপ্তাহে কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রিমিয়ারে যাচ্ছে। আগামী ১৪ মে ফ্রান্সে শুরু হচ্ছে কান চলচ্চিত্র উৎসব, যা ২৫ মে পর্যন্ত চলবে। তার আগেই গ্রেপ্তার হওয়ার মুখে পড়েছেন পরিচালক রসুলফ।

জানা গেছে, সিনেমাটিতে ইরানের বর্তমান বিচারব্যবস্থার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। তাই সিনেমাটিকে কান চলচ্চিত্র উৎসব থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্যই মূলত পরিচালক ও কলাকুশলীদের প্রতি চাপ সৃষ্টি করে আসছিল ইরানি কর্তৃপক্ষ।

আইনজীবী পাকনিয়া জানান, সর্বশেষ গত ৩০ এপ্রিল সিনেমাটির পরিচালকসহ নির্মাণে যুক্ত কলাকুশলীদের জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য সমন পাঠায় ইরানি কর্তৃপক্ষ। গত সপ্তাহে বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাও দেওয়া হয়।

রসুলফকে সাম্প্রতিক সময়ের ইরানি চলচ্চিত্রের অন্যতম নির্মাতা বিবেচনা করা হয়। এর আগে ২০২০ সালে বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে ‘দেয়ার ইজ নো এভিল’ সিনেমার জন্য সর্বোচ্চ পুরস্কার স্বর্ণভালুক জিতেছিলেন রসুলফ।

রসুলফকে এর আগে ২০২২ সালে একবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ওই সময় কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনী হত্যাকাণ্ডের জের ধরে বিক্ষোভের একপর্যায়ে তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ওই বছরের সেপ্টেম্বরে মুক্তি পেয়েছিলেন রসুলফ।