একীভূত হচ্ছে সোনালী ব্যাংক ও বিডিবিএল!

রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (বিডিবিএল) আরেক রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের সাথে ‘স্বেচ্ছায় একীভূতকরণ’ এর জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকে, যেখানে সোনালী ব্যাংক, বিডিবিএল এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং সোনালী ব্যাংকের লোগো

দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষর হলেও, সরকারের কোনো প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। একীভূতকরণের পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার আগে দুটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের সম্পদ ও দায় মূল্যায়ন করা হবে।

এদিকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি অনুযায়ী দুর্বল ব্যাংক অধিগ্রহণকারী ব্যাংক কর্মচারীদের কর্মক্ষমতা মূল্যায়নের পর তিন বছরের মধ্যে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এমতাবস্থায় বিডিবিএলের কর্মীদের মধ্যে তাদের চাকরি নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

বিডিবিএল চেয়ারম্যান শামীমা নার্গিস বলেন, ‘চারটি সূচকের মধ্যে শুধু খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রেই বিডিবিএল আগের তুলনায় দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। এই হার ৪১ শতাংশ ছিল। গত এক বছরে আমি এটিকে ৩৪ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। মাত্র ছয় মাসে এই হার ৫-১০ বা ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনা সম্ভব নয়।’

বিডিবিএল কর্মীদের পাঠানো খোলা চিঠি প্রসঙ্গে শামীমা নার্গিস বলেন, অনেক বিষয় বিবেচনা করে দুই ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা ভালো, সেটাই করা হয়েছে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী বলেন, ‘অনেক চিন্তাভাবনা করেই আমরা একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কোনো চাপে নয়, নিজেরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দুই ব্যাংকের দুই ধরনের অভিজ্ঞতা রয়েছে। এগুলো কাজে লাগিয়ে আমরা এগিয়ে যাব।’

সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আফজাল করিম জানান, বর্তমানে ব্যাংকটির আমানত ১.৫ ট্রিলিয়ন টাকারও বেশি, যেখানে বিডিবিএলের আমানত ৩২ বিলিয়ন টাকা, যা সোনালী ব্যাংকের প্রায় পঞ্চাশ ভাগের এক ভাগ। ঋণের পরিমাণও একই রকম। ফলে (খেলাপি ঋণের) প্রভাব সোনালী ব্যাংকের ওপর খুব বেশি পড়বে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।

বিডিবিএল কর্মীদের আশ্বস্ত করে আফজাল করিম বলেন, ‘বিডিবিএল কর্মীদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমাদের প্রায় ৮,০০০ কর্মী থাকলেও আমাদের আরও জনবলের প্রয়োজন। বিডিবিএলের প্রায় ৬০০ জন কর্মী রয়েছেন। তাই তাদের চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই।’