জাতিসংঘ: সকল সহিংস ঘটনার স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত প্রয়োজন

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনায় জাতিসংঘ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের ওপর জোর দিয়েছে। বুধবার জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।

স্টিফেন ডুজারিক

সাম্প্রতিক সহিংসতার প্রসঙ্গ টেনে এক সাংবাদিক বলেন, ব্যবসায়ী নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়েছেন যে, জামায়াতে ইসলামী নামের পরিত্যক্ত একটি রাজনৈতিক দল কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে উৎখাতের চেষ্টা করেছে। তিনি জানতে চান, জাতিসংঘ মহাসচিবের এই বিষয়ে কি কোন পর্যবেক্ষণ আছে?

উত্তরে ডুজারিক শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ এবং সহিংসতার জবাবদিহিতা সংক্রান্ত জাতিসংঘের অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। “বাংলাদেশে যা ঘটছে, গণগ্রেপ্তার, হত্যাকাণ্ড— এসব নিয়ে আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন,” তিনি বলেন।

তিনি বলেন, জনগণ যাতে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করতে পারে এবং কর্তৃপক্ষ যাতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের অধিকার নিশ্চিত করে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তিতে সুনির্দিষ্ট।

নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “সকল সহিংস ঘটনার স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত হওয়া উচিত। দোষীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে, এবং একইসঙ্গে এমন একটি পরিবেশ তৈরি করতে হবে যা সংলাপের জন্য সহায়ক।”

তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সাম্প্রতিক বিক্ষোভে তরুণদের মধ্যে বিশ্বের অবস্থা, তাদের ভবিষ্যৎ এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি হতাশা প্রকাশ পেয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, যেখানেই বিক্ষোভ হোক না কেন, জনগণ যাতে গ্রেপ্তারের ভয় ছাড়াই, আহত হওয়ার ভয় ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করতে পারে।”

আরেক সাংবাদিক জানতে চান, বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীকে ‘গুলিতে মেরে ফেলার’ নির্দেশ দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের ভূমিকার ক্ষেত্রে এর প্রভাব কী?

ডুজারিক বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে গুলি ব্যবহারের বিষয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগের কথা স্বীকার করেন এবং বলেন, এ বিষয়ে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রকাশ্যে এবং গোপনে উভয়ভাবেই কথা বলা হয়েছে।

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে এর প্রভাব সম্পর্কে জিজ্ঞাসার জবাবে, মুখপাত্র জাতিসংঘের কর্মীদের জন্য নিয়োগ নীতির কথা উল্লেখ করে বলেন, “জাতিসংঘের নীতি অনুযায়ী, সদস্য রাষ্ট্রগুলো নিশ্চিত করবে যে, তাদের মনোনীত কর্মীরা অতীতে কোন আন্তর্জাতিক মানবিক আইন বা মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনে জড়িত ছিলেন না।”

তিনি আরও বলেন, “এই বিষয়ে আমরা জাতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবো এবং নিশ্চিত করবো যে, মানবাধিকার নীতি মেনে সকল পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”