প্রধানমন্ত্রী: বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নেই

কোটা সংস্কার আন্দোলনের আড়ালে জঙ্গিবাদের বর্বরতা দেশ প্রত্যক্ষ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার তিনি স্পষ্ট ঘোষণা দেন, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের কোনো স্থান হবে না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশে একটি স্বেচ্ছাসেবী রক্তদান কর্মসূচি, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

আসন্ন ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষক লীগ এই কর্মসূচির আয়োজন করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের কোনো স্থান নেই।’

সারাদেশে সৃষ্ট সাম্প্রতিক বিশৃঙ্খলার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে প্রতিটি ঘটনার তদন্তে জাতিসংঘ এবং অন্যান্য দেশের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক সহিংসতায় মৃত্যুর ঘটনা তদন্তের জন্য তার সরকার ইতোমধ্যে এক সদস্যবিশিষ্ট বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করেছে। পরে তদন্তের সুবিধার্থে এটিকে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিশনে পরিণত করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো দেশ চাইলে তারাও তাদের বিশেষজ্ঞ পাঠাতে পারে। আমি ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত চাই। যারা এর জন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা জানান, নিষিদ্ধ হওয়ার পর জামায়াত-শিবির তাদের বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাবে।

তিনি দেশবাসীকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের মুখোমুখি হতে হবে।’

সাম্প্রতিক সহিংসতায় অনেক মানুষের মৃত্যু এবং সরকারি সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কোটা আন্দোলনের আড়ালে জঙ্গিরা তাদের ভয়ঙ্কর মুখোশ উন্মোচন করেছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তিনি তার সবকিছু হারিয়েছেন, তাই কাছের মানুষ হারানোর বেদনা তিনি জানেন।

‘তাই আমি (বিশৃঙ্খলার) প্রতিটি ঘটনার তদন্ত চাই, যাতে করে জানা যায় এর পেছনে কে আছে এবং কিভাবে এবং কোন ঘটনা ঘটেছে,’ তিনি বলেন।

তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক সহিংসতায় মৃত্যুর ঘটনা তদন্তের জন্য তার সরকার ইতোমধ্যে এক সদস্যবিশিষ্ট বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করেছে। তদন্তের সুবিধার্থে এটিকে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিশনে পরিণত করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান, যাতে তারা তাদের বিশেষজ্ঞ দল পাঠিয়ে প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করে।

‘কোনো দেশ চাইলে তারাও তাদের বিশেষজ্ঞ পাঠাতে পারে। আমি ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত চাই। যারা এর জন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে,’ তিনি বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে সম্পদ তারা গড়ে তুলেছেন তার ক্ষয়ক্ষতি এবং দেশবাসীর ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা তারা আর সহ্য করবেন না।

তিনি আরও বলেন, সারাদেশে যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয়েছে, তার লক্ষ্য ছিল বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করা।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের পরামর্শক পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন এবং কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সচিব ফরিদুর নাহার লাইলী।

বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভার আরম্ভে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের
শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

পরে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের শহীদদের এবং সাম্প্রতিক সহিংসতায় নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করে এক মিলাদ এবং দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।