বৈঠকে বসছে নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি

সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলনে দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হওয়ার ঘটনায় বিচার চেয়ে চলমান ছাত্র বিক্ষোভের মধ্যেই আগামী রবিবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ সরকারের লোগো

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় এই বৈঠকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারের মতে বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য দায়ী বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণের কৌশল নির্ধারণ করা হবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

সরকারের নীতিনির্ধারকরা ছাত্র বিক্ষোভের সময় দেশে-বিদেশে গুজব ছড়ানোর জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে দায়ী করেছেন।

গত ১৬ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ এবং তার জের ধরে শিশুসহ অন্তত ২১৪ জন নিহত হন। নিহতদের বেশিরভাগই গুলিতে নিহত হয়েছেন।

এই ঘটনায় জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।

ছাত্র এবং নিরস্ত্র নাগরিকদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণের ঘটনায় জাতিসংঘ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

১৯ জুলাই মধ্যরাত থেকে সরকার অনির্দিষ্টকালের জন্য সারাদেশে কারফিউ জারি করে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী মোতায়েন করে।

ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় ফেসবুক, টিকটক, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইউটিউবের মতো জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বেশ কয়েকদিন বন্ধ ছিল।

এ সপ্তাহে সরকার ধীরে ধীরে ব্রডব্যান্ড এবং মোবাইল ইন্টারনেট সেবা পুনরুদ্ধার করে এবং বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়।

বৈঠকের বিষয়বস্তু উল্লেখ করে কর্মকর্তারা জানান, ছাত্রদের নেতৃত্বে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সংঘটিত অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা পর্যালোচনা করা হবে।

সরকারি বার্তা সংস্থা বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) জানায়, আন্দোলনকারীরা বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ কমপক্ষে ৩০টি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, দুটি মেট্রোরেল স্টেশন, উড়ালসড়কের টোল প্লাজা এবং সেতু ভবন, এবং পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে।

এছাড়াও, ১৮ জুলাই থেকে মেট্রোরেল সেবা বন্ধ রয়েছে।

২৭ সদস্যের কমিটির সকল সদস্যকে বৈঠকে যোগদানের জন্য বলা হয়েছে। কমিটির সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী এবং নৌবাহিনীর প্রধান।

জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটি জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কর্তৃপক্ষ।

২০১৮ সালের জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতি অনুমোদনের পর ২০১৯ সালের মার্চ মাসে কমিটিটি গঠন করা হয়। জাতীয় নিরাপত্তা সম্পর্কিত সমস্যা পর্যালোচনা করাই এই কমিটির মূল দায়িত্ব।

৭ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচনের দেড় মাস আগে, গত ১৫ নভেম্বর ২০২৩ সালের পর জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির এটিই হবে প্রথম বৈঠক।