প্রধান বিচারপতি: অতীতে অন্যায়ই ন্যায় বলে বিবেচিত হতো

নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, ‘অতীতে অন্যায়ই ন্যায় বলে বিবেচিত হতো। শিক্ষার্থীরা সেই ধারণা পাল্টে দিয়েছে।’ বৈষম্যের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা এক মহান জাগরণের সূচনা করেছে বলেও তি িমন্তব্য করেন।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ

‘তারা (শিক্ষার্থীরা) বৈষম্যের বিরুদ্ধে এক মহান জাগরণের সূচনা করেছে। শিক্ষার্থীদের এই বিপ্লবের ফলে আমার কাঁধে যে দায়িত্ব এসে পড়েছে, তা আমি পালন করব,’ সোমবার অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (এসসিবিএ) আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিগণ এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, এই মুহূর্তে আমরা ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে আছি এবং সেখান থেকেই আমাদের নতুন করে শুরু করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘এখন থেকে যে কোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের সীমাহীন ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই বিজয়ের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমরা সততার সঙ্গে আমাদের দায়িত্ব পালন করব।’

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান তার বক্তব্যে বলেন, তিনি আশা করেন যে নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি (সৈয়দ রেফাত আহমেদ) জনগণের অধিকার রক্ষা এবং দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সংবিধানের রক্ষক হিসেবে তার দায়িত্ব পালনে বিচ্যুত হবেন না।

‘আপনি 'দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের' মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রথম প্রধান বিচারপতি। শুধু রাষ্ট্রপতি আপনাকে নিয়োগ দিয়েছেন তা নয়, আপনার নিয়োগের পেছনে শত শত শিক্ষার্থীর রক্তে রঞ্জিত রাজপথের এক বীরত্বগাথা রয়েছে। এটি বিশ্ব ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা,’ তিনি বলেন।

‘এই বাংলাদেশ অনেক পরিবারের অভাব-অনটনের কান্না, অনেক নির্যাতিত মানুষের অভিশাপ, যারা মৃত্যুর পরও অনেক মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন, বিগত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া মানুষের পরিবারের বেদনা, এই সবকিছুর প্রতিবাদের ভাষাকে প্রতিফলিত করে। আবু সাইদ, মুগ্ধ ও ফারাজসহ সব শহীদের একটাই প্রত্যাশা ছিল যে আপনার নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের অভিভাবকত্ব প্রকাশ পাবে। আমি আশা করি, আপনার নেতৃত্বে সেই স্বপ্ন পূরণ হবে,’ অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান যোগ করেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, তিনি আশা করেন যে বিচার বিভাগ সিন্ডিকেটমুক্ত হবে এবং সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনে সব ধরনের দুর্নীতি দূর করতে একটি পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হবে।

এর আগে প্রধান বিচারপতি সকাল ৭টার দিকে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।