কর্ণফুলি নদীর তলদেশে ১৫০ বছরের পুরনো ব্রিটিশ জাহাজ!

কর্ণফুলি নদীর তলদেশে চট্টগ্রাম বন্দর চ্যানেলের খননকাজের সময় একটি শতাব্দী প্রাচীন ব্রিটিশ মালবাহী জাহাজের সন্ধান পাওয়া গেছে। ৩৫০ ফুট লম্বা এই কয়লাচালিত জাহাজটি জেটি ৬ এবং ৭ এর মধ্যবর্তী দাঙ্গারচর এলাকায় গত ১৫ আগস্ট আবিষ্কৃত হয়।

ব্রিটিশ জাহাজ

ধারণা করা হচ্ছে, ব্রিটিশ আমলে ভারতীয় উপমহাদেশে বাণিজ্য করার সময় জাহাজটি ডুবে যায়। জাহাজটি থেকে ১৮৬২-৮২ সালের রুপার মুদ্রা, রুপার আসবাবপত্র, দূরবীন, বিপুল পরিমাণে কয়লা, প্লেট, বাটি, পানির পাত্র, চামচ, মোমবাতি ধারক, ফুলদানি এবং হাতির দাঁত, তামা, পিতল এবং রূপা দিয়ে তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-সংরক্ষক ক্যাপ্টেন ফরিদুল আলম জানান, জাহাজটি কর্ণফুলি চ্যানেলে কন্টেইনার জাহাজ চলাচলে ঝুঁকি তৈরি করছিল। উদ্ধারের জন্য জাহাজটিকে দুই ভাগে কেটে ফেলা হয়।

প্রাথমিকভাবে দুটি প্রতিষ্ঠান জাহাজটি উদ্ধারে ব্যর্থ হলেও পরবর্তীতে হিরামনি স্যালভেজ লিমিটেড এ কাজে সফল হয়।

উদ্ধার হওয়া জিনিসপত্র

হিরামনি স্যালভেজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মো. আবুল কালাম বলেন, ‘বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের চুক্তি অনুযায়ী আমরা জাহাজটি উদ্ধার ও সরিয়ে ফেলেছি। নদীর তলদেশে আরও দুটি ডুবন্ত জাহাজ রয়েছে যা অপসারণ করা হবে।’

সিনিয়র ডাইভার মো. জহির জানান, জাহাজটি ৬০ ফুট গভীরে তলিয়ে যাওয়ার কারণে প্রচুর পরিমাণে পলি জমে গিয়েছিল। উদ্ধার অভিযানে দক্ষ ডাইভার ব্যবহার করে জাহাজটিকে দুটি ভাগে কাটা হয়, যা পরে চারটি স্যালভেজ বার্জ ব্যবহার করে নদীর তীরে আনা হয়।

পুরাতত্ত্ব অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ও চট্টগ্রাম নৃ-গোষ্ঠী জাদুঘরের রক্ষক ড. আতাউর রহমান উদ্ধার হওয়া মুদ্রাগুলির ঐতিহাসিক গুরুত্ব নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, রাণী ভিক্টোরিয়ার ভারত শাসনেরও আগের এই মুদ্রাগুলির প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব অপরিসীম।

ড. রহমান আরও বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনসমূহ পুরাতত্ত্ব অধিদপ্তরে হস্তান্তর করা উচিত। উদ্ধার অভিযানের সঙ্গে জড়িত কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল আমাদেরকে অবহিত করা যাতে নিদর্শনগুলো সংরক্ষণ করা হয় এবং কোন জিনিসপত্র হারিয়ে না যায়।’