‘শেখ হাসিনা ঠিকই পালালেন, তবে দেশ ও জাতির অনেক ক্ষতি করে গেলেন’

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার আগে দেশ ও জাতির ব্যাপক ক্ষতি করেছেন এবং বর্তমানে বিদেশে বসে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। সম্প্রতি এক গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এই অভিযোগ করেন।

জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান ও শেখ হাসিনা

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা বলেছিলেন, তিনি দেশ ছাড়বেন না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি পালিয়ে যান। দেশ ও জাতির যে ক্ষতি হওয়ার তা হয়ে গেছে। এখনও বিদেশে বসে তিনি ষড়যন্ত্র করছেন।’

ডা. শফিকুর রহমান সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনকে ‘গণবিপ্লব’ হিসেবে আখ্যায়িত করে এর সঙ্গে জড়িত সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে প্রথমে সেনাবাহিনীকে আক্রমণ করে। বিডিআর বিদ্রোহের নামে পিলখানায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়। এরপর জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের অন্যায়ভাবে ফাঁসি দেওয়া হয়। কিন্তু শত নির্যাতনের পরও আমরা মাথানত করিনি। এরপর আক্রমণ করা হয় বিএনপি, বেগম খালেদা জিয়া ও আলেমদের ওপর।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই ছাত্রসমাজ দেশকে সে অবস্থা থেকে মুক্ত করেছে। তাদের সঙ্গে পুরো জাতি।’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিষয়ে ড. শফিকুর রহমান বলেন, ‘এই সরকারের সদস্যরা তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ও দক্ষ। আমরা এই সরকারের ভালো কাজগুলোকে সমর্থন করব। আবার ভুলত্রুটি হলে সেটা নিয়েও কথা বলব।’

জামায়াত নিষিদ্ধ থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার শেষ মুহূর্তে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে সরাতে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেছিল। কিন্তু এ দেশের জনগণ এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করেছে।’

রাজনৈতিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সংস্কার হতে পারে। আমরাও যে সংস্কার করছি না- এমন নয়।’ তবে জামায়াতের নতুন কোনো দল বা সংগঠন গঠনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেন তিনি।

ড. শফিকুর রহমান জানান, ১৯৭০ সালের নির্বাচনের সময় তিনি নৌকার পোস্টার লিখেছিলেন। একসময় তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত ছিলেন।

জামায়াতে ইসলামীর ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, তিনি ১৯৭৭ সালে ছাত্রশিবির এবং ১৯৮৪ সালে জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেন। ২০১৬ সালে তিনি দলের সেক্রেটারি জেনারেল নিযুক্ত হন। ২০১৯ সালের শেষ দিকে তিনি জামায়াতের আমীর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০২২ সালে দ্বিতীয়বারের মতো তিনি আমীর নির্বাচিত হন। এখন পর্যন্ত তিনি সে দায়িত্ব পালন করে চলছেন।