বাংলাদেশে আসছে আদানির বিদ্যুৎ

দুই সপ্তাহের বিরতির পর আদানি পাওয়ার তার গোড্ডা বিদ্যুৎ কেন্দ্র পুনরায় পূর্ণ উৎপাদনে ফিরিয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশে আজ থেকে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। ভারতীয় কোম্পানির ঢাকা কার্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘আজ সকাল ৮টায় প্রথম ইউনিট রেকর্ড ৫১৩.৩২ মেগাওয়াট এবং দ্বিতীয় ইউনিট ৬৬৮.৫৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে।’

গোড্ডা বিদ্যুৎ কেন্দ্র

‘দুপুর ১টার দিকে প্রথম ইউনিট ৫৯৩.৩৫ মেগাওয়াট এবং দ্বিতীয় ইউনিট ৭৬৩.৯৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে,’ বিজ্ঞপ্তিতে আরও যোগ করা হয়েছে।

গত ১৩ আগস্ট কিছু প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে দ্বিতীয় ইউনিট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আদানির ঝাড়খণ্ডের বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি শুধুমাত্র একটি ইউনিট দিয়েই চলছিল।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় ইউনিট গতকাল বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা ১০ মিনিটে পুনরায় উৎপাদনে ফিরেছে।

সাম্প্রতিক প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে, শুধুমাত্র একটি ইউনিট দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছিল, যার ফলে বাংলাদেশে আদানি পাওয়ারের বিদ্যুৎ সরবরাহ কিছুটা কমে গিয়েছিল।

১৪ আগস্ট আদানি পাওয়ার বাংলাদেশকে ৭৫০ মেগাওয়াটের বেশি এবং ১৫ আগস্ট ৭৬৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছিল। সাধারণত বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি তার দুটি ইউনিট থেকে বাংলাদেশে প্রায় ১,৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করে।

আদানি পাওয়ারের মতে, দ্বিতীয় ইউনিট বন্ধ হওয়ার পর তারা বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) এবং পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি বাংলাদেশ (পিজিসিবি) এর সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রেখেছে।

কোম্পানিটি সম্প্রতি অপ্রত্যাশিত প্রযুক্তিগত ত্রুটির জন্য ক্ষমাও চেয়েছে।

‘আদানির মতো যেকোনো দেশীয় বা আন্তর্জাতিক কোম্পানির বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনায় এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে,’ তারা বলেছে।

‘আমরা যত দ্রুত সম্ভব এই সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করছি। আশা করছি শীঘ্রই পূর্ণ বিদ্যুৎ উৎপাদনে ফিরে যেতে পারব,’ কোম্পানিটি আরও যোগ করেছে।

পূর্ব ঝাড়খণ্ড রাজ্যে অবস্থিত ১,৬০০ মেগাওয়াট গোড্ডা প্ল্যান্টটি একটি প্রতিবেশী দেশে তার ১০০% বিদ্যুৎ রপ্তানি করার জন্য চুক্তিবদ্ধ।

তবে এটিই প্রথমবার নয় যে প্ল্যান্টটি বন্ধ হয়ে গেছে। এর আগে চলতি বছরের জুন মাসের শেষের দিকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়।

ঈদুল আযহার ছুটির আগে থেকেই একটি ইউনিট নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন্ধ ছিল। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দ্বিতীয় ইউনিটটি বন্ধ হয়ে যায়।

আদানি পাওয়ার বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি করার জন্য চুক্তিবদ্ধ। তবে, বাংলাদেশের কোম্পানিটির কাছে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত বিল রয়েছে। ২৩ আগস্ট প্রকাশিত রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদানি পাওয়ারের কাছে বাংলাদেশের প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার অপরিশোধিত পাওনা জমেছে।

ভারত সরকার সম্প্রতি কোম্পানিটিকে, যা গোড্ডা প্ল্যান্ট থেকে তার সমস্ত উৎপাদন বাংলাদেশে বিক্রি করার জন্য চুক্তিবদ্ধ ছিল, দেশীয় বাজারে তা সরবরাহ করার অনুমতি দিয়েছে।

১২ আগস্ট তারিখের একটি অভ্যন্তরীণ ফেডারেল বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের স্মারকলিপি, যা রয়টার্স দেখেছে, ‘বিশেষভাবে একটি প্রতিবেশী দেশে’ বিদ্যুৎ সরবরাহকারী জেনারেটরদের পরিচালনাকারী ২০૧৮ সালের নির্দেশিকা সংশোধন করে।

তবে আদানি পাওয়ার জানিয়েছে, ভারতে বিদ্যুৎ আইনে সাম্প্রতিক সংশোধন দুই দেশের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ চুক্তির ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না।

টিবিএস অবলম্বনে