ভিসা জটিলতায় ভারতে বাংলাদেশিদের এমআরসিপি পরীক্ষা অনিশ্চিত

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে জরুরি চিকিৎসা ভিসা ছাড়া ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র (আইভিএসি) সকল ধরনের ভিসা সেবা বন্ধ করে দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের কারণে প্রায় ৫০ জন বাংলাদেশি চিকিৎসক ব্রিটেনের রয়েল কলেজ অফ ফিজিশিয়ান্স (এমআরসিপি) সদস্যপদ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারছেন না।

লোগো

যদিও এমআরসিপি পরীক্ষা ভারত বা সিঙ্গাপুরে দেওয়া যায়, ভিসা জটিলতার কারণে এসব চিকিৎসকরা এখন অনিশ্চয়তার মুখোমুখি। আবেদন জমা দেওয়া সত্ত্বেও, আইভিএসি থেকে এখনও কোনো সাড়া মেলেনি তাদের।

দীর্ঘদিন ধরে, ১০টি এমআরসিপি পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপনকারী ভারত, পরীক্ষায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক অনেক বাংলাদেশি চিকিৎসকের কাছে একটি গন্তব্য হিসেবে পরিচিত ছিল।

তবে, এসব কেন্দ্রে সীমিত আসনের কারণে পরীক্ষার্থীদের জন্য স্থান নিশ্চিত করা সবসময়ই কঠিন ছিল।

ভুক্তভোগী এক এমআরসিপি পরীক্ষার্থী বলেন, ‘প্রথমবারের মতো, বাংলাদেশের এভারকেয়ার হাসপাতাল ২২ অক্টোবর পরীক্ষার আয়োজন করছে, কিন্তু সেখানে মাত্র ৪৫টি আসন রয়েছে। তাই আমাদের ভারতীয় কেন্দ্রগুলিতে আবেদন করতে হয়েছিল। জুলাই মাসে আমরা দুই লাখ টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করেছি, কিন্তু ৫ আগস্ট থেকে ভিসা প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় আমরা আমাদের ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে পারছি না।’

একই হতাশা প্রকাশ করে আরেকজন চিকিৎসক বলেন, ‘এমআরসিপি পরীক্ষা বিশ্বব্যাপী চিকিৎসকদের জন্য একটি সম্মানজনক যোগ্যতা এবং অনেক বাংলাদেশি চিকিৎসক এতে সাফল্য অর্জন করে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখেন। দুর্ভাগ্যবশত, ভিসা জটিলতার কারণে আমাদের অনেকেই বিপাকে পড়েছি। আমরা ভারতীয় হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, কিন্তু এখনও কোনো সাহায্য পাইনি।’

রাজনৈতিক সঙ্কটের জের ধরে ৫ আগস্ট বাংলাদেশে কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় আইভিএসি। ২ সেপ্টেম্বর সীমিত পরিসরে কার্যক্রম শুরু করলেও, চিকিৎসা ভিসা ছাড়া অন্যান্য সকল শ্রেণির ভিসা প্রক্রিয়াকরণ এখনও বন্ধ রয়েছে।

শুধু চিকিৎসকরাই নন, ইউরোপে পড়াশোনা করতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাও এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। আইভিএসি-এর কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তাদের অনেকেই দেরিতে পড়ছেন।

পর্তুগাল, বুলগেরিয়া, রোমানিয়া, হাঙ্গেরি, লিথুয়ানিয়া এবং অস্ট্রিয়ার মতো দেশগুলোর বাংলাদেশে দূতাবাস না থাকায়, এসব দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের ভারতে গিয়ে ভিসার সাক্ষাৎকার দিতে হয়।

এই পরিস্থিতিতে বুলগেরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের জন্য কিছুটা স্বস্তির ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা করেছে যাতে শিক্ষার্থীরা ভিয়েতনাম, পাকিস্তান এবং কাজাখস্তানে অবস্থিত বুলগেরিয়ান দূতাবাসে তাদের ভিসা আবেদনপত্র জমা দিতে পারে।

নয়াদিল্লিতে অবস্থিত বুলগেরিয়ান দূতাবাসে আবেদন করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এমন শিক্ষার্থীদের এখন হ্যানয়, ইসলামাবাদে গিয়ে সাক্ষাৎকার দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।