অবিশ্বাস্য ধস: আফগানদের কাছে বড় হার টাইগারদের

লক্ষ্যটা বড় ছিল না। বাংলাদেশ হাঁটছিল জয়ের পথেই। কিন্তু আচানক নেমে এলো ঝড়। সেই ঝড়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ল টাইগাররা। অবিশ্বাস্য ব্যাটিং ধসে আফগানিস্তানের কাছে বিরাট ব্যবধানে হেসে বসল নাজমুল হাসান শান্তর দল। এই জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে এগিয়ে গেল আফগানরা (১-০)।

৫৫ রানের জুটি গড়ার ফাঁকে সৌম্য সরকার ও নাজমুল হোসেন শান্ত। ছবি: এসিবি

আজ বুধবার শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের কাছে ৯২ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের দুই বল বাকি থাকতে ২৩৫ রানে অলআউট হয় আফগানরা। জবাবে ১৪৩ রানে গুটিয়ে যায় টাইগাররা। আগামী শনিবার একই ভেন্যুতে সিরিজ বাঁচাতে মাঠে নামবে শান্তর দল।

রান তাড়ার কাজটা প্রায় সহজ করে দিয়েছিলেন টপ অর্ডারের তিন ব্যাটার সৌম্য সরকার, অধিনায়ক শান্ত ও মেহেদি হাসান মিরাজ। দলীয় ১২ রানে ওপেনার তানজিদ তামিমকে হারানোর ধাক্কা ভালোভাবেই সামাল দিয়েছিলেন সৌম্য-শান্ত। দলীয় ৬৫ রানে এই জুটি বিচ্ছিন্ন হয়।

সৌম্যর বিদায়ে ভাঙে জুটি। ৪৫ বলে ৩৩ রানে ফেরেন বাঁহাতি ওপেনার। পরে হাল ধরেন শান্ত ও মিরাজ। তৃতীয় উইকেট জুটিতে দুজন মিলে করেন ৫৫ রান। দুই উইকেটে ১২০ রান তুলে ফেলা বাংলাদেশ এ সময় সহজ জয়ের স্বপ্ন দেখতে থাকে। এরপর যা ঘটল সেটি ছিল কল্পনারও বাইরে।

২৩ রানের মধ্যে টাইগাররা হারায় আট উইকেট। এর মধ্যে ৩৩তম ওভারেই তিন উইকেটের পতন। শেষ ১১ রান যোগ করতে গিয়ে বাংলাদেশ খোয়ায় সাত উইকেট। শেষ ছয় ব্যাটারের কেউ যেতে পারেননি দুই অংকে। শান্ত ৬৮ বলে ৪৭, মিরাজ ৫১ বলে ২৮ ও তাওহিদ হৃদয় ২১ বলে ১১ রানে আউট হন।

২৬ রানে ছয় উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে ধসিয়ে দিয়েছেন আল্লাহ মোহাম্মদ গাজানফার। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে অবধারিতভাবেই ম্যাচ সেরা হয়েছেন আফগান এই স্পিনার। দলটির আরেক স্পিনার রশিদ খান পেয়েছেন দুই উইকেট। একটি করে শিকার মোহাম্মদ নবি ও আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের।

এর আগে বল হাতে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল দারুণ। ৩৫ রানের মধ্যে চার উইকেট তুলে নেয় তারা। এ সময় এ সময় আফগানদের টপ অর্ডারে ধস নামান মোস্তাফিজুর রহমান। কিন্তু শুরুর ছন্দ ধরে রাখা রাখা যায়নি। পঞ্চম উইকেট জুটিতে প্রাথমিক বিপর্যয় কিছুটা সামলে ওঠে আফগানরা।

হাল ধরেন অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শাহিদি। ৩৬ রানের জুটি গড়েন গুলবাদিন নাইবকে নিয়ে। জুটি ভাঙে নাইবের বিদায়ে। এরপরই আসল প্রতিরোধ গড়ে তোলেন হাসমতউল্লাহ ও মোহাম্মদ নবি। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে দুজন মিলে গড়েন ১০৪ রানের জুটি। এ সময় দুজনই করেন ব্যক্তিগত ফিফটি। হাসমতউল্লাহ ৯২ বলে ৫২ রানে আউট হন।

নবি অবশ্য সেঞ্চুরির আভাস দিয়েছিলেন। কিন্তু ৭৯ বলে ৮৪ রানে ফিরে যান এই অলরাউন্ডার। এ ছাড়া সেদিকুল্লাহ অটল ২১, নাইব ২২ ও নাঙ্গেলিয়া খারোতে ২৮ বলে ২৭* রান করেন। বাংলাদেশের পক্ষে চারটি করে উইকেট নেন মোস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদ। ফিজ আফগানদের টপ অর্ডারে এবং তাসকিন মিডল অর্ডারে ধস নামান। এ ছাড়া শরিফুল ইসলাম এক উইকেট পেয়েছেন। যা বিফলেই গেল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আফগানিস্তান: ২৩৫/১০ (৪৯.২ ওভার)।
বাংলাদেশ: বাংলাদেশ ১৪৩/১০ (৩৪.৩ ওভার)।
ফল: আফগানিস্তান ৯২ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: আল্লাহ মোহাম্মদ গাজানফার (আফগানিস্তান)।
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজে আফগানিস্তান ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে।
দ্বিতীয় ওয়ানডে: শনিবার (শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়াম)।