শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত এক মাসে শেষ করার নির্দেশ

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন এক মাসের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে।

শেখ হাসিনা

ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট মো. তাজুল ইসলাম জানান, বিচারপতি মো. গোলাম মোর্ত্তজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দিয়েছে।

এছাড়া, আদালত পলাতক আসামিদের সম্পর্কে তথ্য দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে এবং এ বিষয়ে শুনানির জন্য ১৭ ডিসেম্বর তারিখ নির্ধারণ করেছে।

এর আগে সকালে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণআন্দোলনের সময় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বরখাস্ত আওয়ামী লীগ সরকারের নয়জন সাবেক মন্ত্রীসহ ১৩ জন আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

আইসিটির প্রধান কৌঁসুলি মো. তাজুল ইসলাম জানান, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

তিনি আরও জানান, সকল আসামি বর্তমানে অন্যান্য মামলায় কারাগারে রয়েছেন।

যাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে তারা হলেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী।

সাবেক মন্ত্রী ড. দীপু মনি, হাসিনার উপদেষ্টা ও ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমান, সাবেক মন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম এবং সাবেক মন্ত্রী দীপু মনি তাদের মধ্যে অন্যতম।

সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাককেও তাদের সঙ্গে হাজির করার কথা থাকলেও, অসুস্থতার কারণে তাকে হাজির করা যায়নি।

গত ২৭ অক্টোবর, আইসিটি ১৪ জন আসামিকে ১৮ নভেম্বর হাজির করার নির্দেশ দিয়েছিল।

এছাড়া, আদালত সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল কাফি, আরাফাত হোসেন, আবুল হাসান এবং মাজহারুল ইসলামকে ২০ নভেম্বর হাজির করার নির্দেশ দিয়েছে।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ৫ আগস্ট পতনের পর আইসিটিতে হত্যা, নির্যাতন, অপহরণ এবং হয়রানিসহ বিভিন্ন অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

প্রধান কৌঁসুলি মো. তাজুল ইসলাম সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অন্যান্য পলাতকদের ফিরিয়ে আনার জন্য ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারির উদ্যোগ নিতে আইজিপি মো. মঈনুল ইসলামকে চিঠি লিখেছেন।

জুলাই ও আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে, যা সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হয়েছিল এবং পরে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়, ১,০০০ এরও বেশি মানুষ নিহত এবং অনেকে আহত হয়েছিল। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়েই শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটেছে।