বিখ্যাত ক্রীড়া ধারাভাষ্যকার গ্রেগ গাম্বেল ৭৮ বছর বয়সে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) মারা গেছেন। তার পরিবারের পক্ষ থেকে এই মর্মান্তিক সংবাদ নিশ্চিত করা হয়েছে।

sportscaster greg gumbelগ্রেগ গাম্বেল

গাম্বেলের স্ত্রী মার্সি এবং কন্যা মিশেল এক বিবৃতিতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্রীড়া সম্প্রচারে গাম্বেলের অসামান্য অবদান, অনুপ্রেরণা, নিষ্ঠা এবং ক্রীড়াঙ্গনের প্রতি তীব্র ভালোবাসার কথা স্মরণ করে তারা বলেন, গাম্বেলের অনন্য কণ্ঠস্বর চিরকাল অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

চলতি বছরের মার্চ মাসে স্বাস্থ্যগত কারণে ১৯৯৭ সালের পর প্রথমবারের মতো এনসিএএ টুর্নামেন্টে অনুপস্থিত ছিলেন গাম্বেল। ১৯৯৮ সালে সিবিএসে পুনরায় যোগদানের পর তিনি স্টুডিও উপস্থাপক হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। এর আগে তিনি এনবিসিতেও কাজ করেছিলেন। গত বছর গাম্বেল সিবিএসের সঙ্গে তার চুক্তি নবায়ন করেন, কলেজ বাস্কেটবলের উপস্থাপনা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি এনএফএলের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।

২০০১ সালে সুপার বোল ৩৫-এ ইতিহাস সৃষ্টি করেন গাম্বেল। তিনি ছিলেন প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ধারাভাষ্যকার যিনি কোনো বৃহৎ মার্কিন ক্রীড়া চ্যাম্পিয়নশিপের প্লে-বাই-প্লে ধারাভাষ্য দেন। সিবিএস স্পোর্টসের সভাপতি এবং সিইও ডেভিড বারসন গাম্বেলের প্রতিভাকে উচ্চ প্রশংসা করে তাকে একজন অগ্রণী সম্প্রচারক এবং প্রতিভাবান গল্পকার বলে অভিহিত করেছেন।

দুইবার সিবিএসে কাজ করেছেন গাম্বেল। ১৯৯৪ সালে এনবিসিতে যোগদান করার আগে তিনি সিবিএস ছেড়েছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে সিবিএস যখন আবার ফুটবল সম্প্রচারের অধিকার ফিরে পায়, তখন তিনি সিবিএসে ফিরে আসেন। সিবিএস স্পোর্টসের সাবেক চেয়ারম্যান শন ম্যাকম্যানাস বলেছেন, গাম্বেল এনএফএল এবং এনসিএএ কভারেজের মান উন্নত করেছিলেন। তিনি সর্বদা সহকর্মীদের প্রতি স্নেহশীল, হাস্যরসিক এবং উদার ছিলেন।

গাম্বেল ১৯৯২ এবং ১৯৯৪ সালের শীতকালীন অলিম্পিক, মেজর লীগ বেসবল এবং ফিগার স্কেটিং চ্যাম্পিয়নশিপের সিবিএস কভারেজও উপস্থাপনা করেছেন। এনবিসিতে, তিনি ১৯৯৬ আটলান্টা গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের দিবাকালীন কভারেজ উপস্থাপনা করেন। তবে, ফুটবল এবং বাস্কেটবলই ছিল তার সবচেয়ে প্রিয় ক্রীড়া। ১৯৯০-১৯৯৩ এবং ২০০৪-০৫ সালে তিনি সিবিএসের ‘দ্য এনএফএল টুডে’ অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ছিলেন।

১৯৯০ সালে ব্রেন্ট মাসবার্গারের স্থলাভিষিক্ত হিসেবে গাম্বেল ‘দ্য এনএফএল টুডে’-এর উপস্থাপক হন। এই অভিজ্ঞতাকে তিনি সম্মানজনক এবং একইসঙ্গে প্রতিযোগিতাপূর্ণ বলে বর্ণনা করেছিলেন। ১৯৯৮ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত গাম্বেল সিবিএসের প্রধান প্লে-বাই-প্লে ধারাভাষ্যকার হিসেবে এনএফএল-এর জন্য কাজ করেন। তিনি সুপার বোল ৩৫ এবং ৩৮-এর ধারাভাষ্য দেন। ২০২২ মৌসুমের পর তিনি ধারাভাষ্য থেকে অবসর নেন।

ক্লার্ক কেলোগের মতো সহকর্মীরা গাম্বেলকে একজন দয়ালু এবং প্রতিভাবান সহকর্মী হিসেবে স্মরণ করছেন। ‘দ্য এনএফএল টুডে’-এর উপস্থাপক জেমস ব্রাউন তাকে বহুমুখী এবং কারিশমাতিক ব্যক্তিত্ব বলে বর্ণনা করেছেন।

শিকাগোতে জন্মগ্রহণকারী গাম্বেল ১৯৬৭ সালে লোরাস কলেজ থেকে ইংরেজিতে ডিগ্রি অর্জন করেন। প্রথমে ইংরেজি শিক্ষক হওয়ার আকাঙ্ক্ষা থাকলেও, তার ভাই ব্রায়ান্ট গাম্বেলের পথ অনুসরণ করে ১৯৭৩ সালে শিকাগোর ডব্লিউএমএকিউ-টিভিতে ক্রীড়া সম্প্রচারে যোগ দেন।

গ্রেগ গাম্বেল ইএসপিএন এবং ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেন নেটওয়ার্কেও কাজ করেছেন। তিনি স্থানীয় এমি পুরস্কার এবং ২০০৭ সালে ক্রীড়া সম্প্রচারে উৎকর্ষতার জন্য প্যাট সামারল পুরস্কার অর্জন করেছেন। ক্যারিয়ারের বাইরে, মার্চ অফ ডাইমস এবং সেন্ট জুডস চিলড্রেনস রিসার্চ হসপিটালের মতো দাতব্য প্রতিষ্ঠানকে সমর্থন করেছেন।

ক্রীড়া সম্প্রচার জগৎ একজন অগ্রণী, প্রতিভাবান এবং মহান ব্যক্তিত্বকে হারাল। তার প্রভাব এবং উত্তরাধিকার চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.