রমজানে ন্যায্যমূল্যে ডিম-মুরগি বিক্রির আশ্বাস

আসন্ন রমজান মাসে ন্যায্যমূল্যে ডিম ও মুরগি বিক্রি করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন পোল্ট্রি শিল্পের নেতৃবৃন্দ। সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়।

ছবি - সংগৃহীত

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে রমজান মাসজুড়ে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে ডিম ও মুরগি বিক্রি করা হবে বলে জানান ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখার (ডব্লিউপিএসএ-বিবি) সভাপতি মশিউর রহমান। এতে সাধারণ মানুষ সুলভ মূল্যে এই প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী কিনতে পারবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সাংবাদিক ফোরাম (এফএলজেএফ), ডব্লিউপিএসএ-বিবি এবং বাংলাদেশ পোল্ট্রি শিল্প কেন্দ্রীয় পরিষদের (বিপিআইসিসি) যৌথ আয়োজনে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।

বিপিআইসিসির যুগ্ম-আহ্বায়ক মশিউর রহমান বলেন, ২০২৪ সালটি পোল্ট্রি শিল্পের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত, খরা, রোগবালাই এবং বাজার মূল্যের অস্বাভাবিক উত্থান-পতন এর জন্য দায়ী। অনেক খামারি দেউলিয়া হয়েছেন। বেশ কয়েকটি বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রমও সংকুচিত করতে বাধ্য হয়েছে। তিনি বলেন, দেশীয় পোল্ট্রি শিল্প ২০৫০ সালের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।

ডব্লিউপিএসএ-বাংলাদেশের মহাসচিব বিপ্লব কুমার প্রামাণিক জানান, ২০২০ সালের পর পোল্ট্রি খাদ্য উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। তবে গত বছর উৎপাদনে কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছর আরও বৃদ্ধির আশা করা হচ্ছে। ফলে ডিম ও মুরগির উৎপাদনও বাড়বে। তবে খাবার অবশ্যই নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর হতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশ ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএবি) সভাপতি মাহবুবুর রহমান পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে পোল্ট্রি খামারিদের যেসব অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়েছে সে সম্পর্কে আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তাদের অভিযোগ প্রকাশ করতে পারেননি। পোল্ট্রি সংগঠনের অনেক নেতা মামলার সম্মুখীন হয়েছেন। বেশ কিছু মামলা এখনও বিচারাধীন। আমরা এমন পরিস্থিতি আর দেখতে চাই না।

মাহবুবুর রহমান আরও বলেন, সরকার ডিমের খুচরা মূল্য ১১.৮৭ টাকা নির্ধারণ করেছে। কিন্তু বর্তমানে বাজারে তা মাত্র ১০.৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রমজান মাসে মূল্য আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ক্ষুদ্র খামারিরা এই ক্ষতি সামাল দিতে পারবেন না। সরকার এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্টদের এ ব্যাপারে সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, পোল্ট্রি খাত থেকে খামারি ও উদ্যোক্তাদের বহির্গমন প্রতিরোধ করা জরুরি। পোল্ট্রি খাতের জন্য একটি টেকসই ও শক্তিশালী ভিত্তি গড়ে তোলা প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এফএলজেএফ এর সভাপতি এম এ জলিল মুন্না রাইহান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে ডিবিসি নিউজের সম্পাদক লোটন একরাম, আরটিভির প্রধান সংবাদ প্রধান ইলিয়াস হোসেন এবং এফএলজেএফ এর মহাসচিব জাহিদুর রহমান ও বক্তব্য রাখেন।

সেমিনারে, ডব্লিউপিএসএ এবং বিপিআইসিসির প্রতিনিধিরা জানান, ১৩তম আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি শো ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে তিন দিনব্যাপী পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চীন বন্ধুত্ব প্রদর্শনী কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে।

১৭টি দেশের ২০০ টির বেশি কোম্পানি তাদের নবীনতম প্রযুক্তি ও পণ্য প্রদর্শন করবে। পোল্ট্রি মেলা সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। কুড়িল বিশ্ব রোডের ৩০০ ফুট এলাকা থেকে সারাদিন বিনামূল্যে শাটল বাস সেবা প্রদান করা হবে।

এছাড়াও, ১৮-১৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকার একটি হোটেলে একটি আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।