অর্ধেক খরচে ৩০০ ঘর নির্মাণ: সেনাবাহিনীর প্রশংসায় প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বন্যাদুর্গতদের জন্য অত্যন্ত মানসম্মত ও স্বচ্ছতা বজায় রেখে ঘর নির্মাণ করে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বিশেষ করে বরাদ্দকৃত অর্থের অর্ধেক ব্যবহার করে প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নকে তিনি একটি অসাধারণ অর্জন হিসেবে উল্লেখ করেন।

ছবি - সংগৃহীত

আজ বুধবার (৩০ এপ্রিল) নিজ কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলার বন্যাদুর্গতদের জন্য নির্মিত ৩০০টি ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি বিশেষ আবাসন প্রকল্পের আওতায় গত বছরের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলায় প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও অত্যন্ত দক্ষতার সাথে ৩০০টি ঘর নির্মাণ করেছে।’

তিনি উল্লেখ করেন, ঘর নির্মাণের জন্য বরাদ্দকৃত ৫০ কোটি টাকার অর্ধেক অর্থেই অত্যন্ত গুণগত মান নিশ্চিত করে এবং অর্থের যথাযথ ব্যবহার করে সেনাবাহিনী প্রকল্পটি সম্পন্ন করেছে। এই সাফল্যের জন্য তিনি সেনাবাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

গত বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বরে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা ভয়াবহ বন্যার কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ওই বন্যায় এই চার জেলার বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন এবং অনেকে তাদের ঘরবাড়ি হারিয়েছিলেন। বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানো সরকারের দায়িত্ব ছিল এবং সেই দায়িত্ববোধ থেকেই এই বিশেষ ঘর নির্মাণ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয় বলে তিনি জানান।

অধ্যাপক ইউনূস আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ভবিষ্যতেও যেকোনো দুর্যোগে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াবে এবং আর্তমানবতার সেবায় নিয়োজিত থাকবে।

তিনি বলেন, বন্যায় যারা ঘর হারিয়েছিলেন, তারা এখন সরকারের দেওয়া নতুন ঘরে তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিরাপদে বসবাস করতে পারবেন। এসময় তিনি সুবিধাভোগীদের প্রতি তাদের সন্তানদের যথাযথ শিক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান, যাতে তারা ভবিষ্যতে ভালো মানুষ ও সফল উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।

অনুষ্ঠানে চার জেলায় মোট ৩০০টি ঘর বিতরণ করা হয়। প্রধান উপদেষ্টার পক্ষে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসকরা সুবিধাভোগীদের কাছে ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন। এর মধ্যে ফেনীতে ১১০টি, নোয়াখালীতে ৯০টি, কুমিল্লায় ৭০টি এবং চট্টগ্রামে ৩০টি ঘর রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় প্রান্ত থেকে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, বীর প্রতীক এবং সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে ঊর্ধ্বতন বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।