গাজায় ২১১ সাংবাদিক হত্যা: বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে ইসরায়েলকে জাতিসংঘের হুঁশিয়ারি

বিশ্বজুড়ে শুক্রবার (২ মে) পালিত হলো বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস। এই দিবস উপলক্ষে ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের ক্রমবর্ধমান মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে জাতিসংঘ।

প্রতীকী ছবি

সংস্থাটির মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর) জানিয়েছে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় অন্তত ২১১ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ২৮ জন নারী। সাংবাদিকদের ইচ্ছাকৃতভাবে লক্ষ্যবস্তু বানানো যুদ্ধাপরাধের শামিল হতে পারে বলেও সতর্ক করেছে সংস্থাটি।

ওএইচসিএইচআর-এর বিবৃতি এবং জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কোর তথ্য অনুযায়ী, গাজায় কর্তব্যরত অবস্থায় কমপক্ষে ৪৭ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, গত ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত ৪৯ জন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক ইসরায়েলি আটক কেন্দ্রে বন্দী রয়েছেন।

ফিলিস্তিনের একজন সাংবাদিক ওএইচসিএইচআর-কে জানিয়েছেন, তাদের প্রেস জ্যাকেটগুলো এখন আর সুরক্ষা দিতে পারছে না, বরং এগুলো আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাটি মনে করে, এটি ইঙ্গিত দেয় যে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।

ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক সাংবাদিকরা জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিসে জানিয়েছেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাদের মারধর, অপমান এবং যৌন ও লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতার শিকার হতে হয়েছে। জাতিসংঘের মতে, ফিলিস্তিনি সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ ও ভীতি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যেই এ ধরনের নির্যাতন চালানো হচ্ছে।

গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় বিদেশী সাংবাদিকদের প্রবেশে ইসরায়েলের অব্যাহত নিষেধাজ্ঞারও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ। ওএইচসিএইচআর বলেছে, এর ফলে স্থানীয় ফিলিস্তিনি সাংবাদিকরাই বোমাবর্ষণ ও ভয়াবহ সহিংসতার মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য হচ্ছেন।

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, শুধু গাজা নয়, পূর্ব জেরুজালেমসহ অধিকৃত পশ্চিম তীরেও সাংবাদিকরা প্রতিনিয়ত হয়রানি, আটক এবং সহিংসতার সম্মুখীন হচ্ছেন।

সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি