গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ঐকমত্য চায় কমিশন: ছাড় দিতে দলগুলোর প্রতি আহ্বান আলী রিয়াজের

গণতন্ত্রকে পরিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠা এবং রাষ্ট্র পুনর্গঠনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে ছাড় দিয়ে জাতীয় ঐকমত্যে পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি জোর দিয়ে বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে একটি জাতীয় সনদ প্রণয়ন করাই কমিশনের মূল লক্ষ্য।

বৈঠকের ছবি

আজ শনিবার (৩ মে) জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সঙ্গে আয়োজিত এক সংলাপে সূচনা বক্তব্যে অধ্যাপক রীয়াজ এই আহ্বান জানান।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সৃষ্ট জাতীয় ঐক্যকে দেশের অগ্রগতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্র পুনর্গঠন ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে আমরা আশা করি প্রত্যেকটি দল ও জোট জাতীয় স্বার্থে কিছুটা ছাড় দিতে প্রস্তুত থাকবে। কারণ আমরা সকলে মিলেই একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের চেষ্টা করছি।’

তিনি আরও স্পষ্ট করেন যে, সব বিষয়ে একমত হওয়া সম্ভব না হলেও রাষ্ট্র বিনির্মাণ এবং জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা তৈরির মতো মৌলিক বিষয়গুলোতে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব এবং সেটাই কমিশনের প্রচেষ্টা।

সংলাপে অংশ নিয়ে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের (এনপিপি) চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ জানান, কমিশনের উত্থাপিত ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে তারা ১১২টিতে একমত পোষণ করেছেন, ২৬টির সঙ্গে দ্বিমত এবং ২৮টিতে আংশিক সম্মতি জানিয়েছেন। ফরহাদের নেতৃত্বে জোটের ১১ জন নেতা এদিনের সংলাপে উপস্থিত ছিলেন।

ফরিদুজ্জামান ফরহাদ দীর্ঘমেয়াদী অনির্বাচিত সরকারের সম্ভাব্য ঝুঁকির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনি এমন একটা ভোটের ব্যবস্থা করে দেন যাতে মানুষ বলতে পারে দীর্ঘ পনেরো বছর পর আমরা একটা ভোট দেখতে পেরেছি এবং ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে সরকার গঠন করতে পেরেছি।’

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে ঐকমত্য কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং ড. ইফতেখারুজ্জামানও উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ পর্যালোচনা ও গ্রহণের জন্য গত ১২ ফেব্রুয়ারি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চেয়ারপার্সন করে সাত সদস্যের 'জাতীয় ঐকমত্য কমিশন' গঠন করা হয়। কমিশনকে সাচিবিক সহায়তা দিচ্ছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়।