রাশিয়ার ট্রাফিক পুলিশের ওপর বন্দুকধারীদের হামলা: ৩ পুলিশ সদস্য নিহত

রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রজাতন্ত্র দাগেস্তানে ট্রাফিক পুলিশের ওপর এক সশস্ত্র হামলায় তিন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনীর পাল্টা অভিযানে দুই হামলাকারীও নিহত হয়েছেন। হামলায় এক কিশোরীসহ বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক ও পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

হামলার পর পুলিশ টহল জোরদার করা হয়

স্থানীয় সময় সোমবার (৫ মে) দুপুর ২টা ২০ মিনিটে দাগেস্তানের রাজধানী মাখাচকালায় এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে সিএনএন ও আরব নিউজ জানিয়েছে।

দাগেস্তানের আঞ্চলিক প্রধান সের্গেই মেলিকভ জানান, পুলিশ সদস্যরা একটি গাড়ির কাছে গেলে বন্দুকধারীরা অতর্কিত গুলি চালাতে শুরু করে। এতে ঘটনাস্থলেই তিন পুলিশ সদস্য নিহত হন। আহতদের মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরে আরও একজনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আরও চার পুলিশ সদস্য এবং ১৭ বছর বয়সি এক কিশোরীসহ বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন।

এদিকে, রাশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে দুই বন্দুকধারী ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে। উভয়ের বয়স ২৪ বছর বলে শনাক্ত করা হয়েছে। তবে হামলায় মোট কতজন অংশ নিয়েছিল, তা কর্তৃপক্ষ এখনও নিশ্চিত করেনি। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, আরও কয়েকজন হামলাকারী পালিয়ে গেছে এবং তাদের ধরতে এলাকাজুড়ে অভিযান চলছে। ঘটনার পরপরই একটি ফৌজদারি তদন্ত শুরু হয়েছে।

ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া টেলিগ্রাম ফুটেজে একটি পুলিশের গাড়ির পাশে কয়েকটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে এবং গুলির শব্দ শোনা গেছে।

রুশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মাখাচকালার এই হামলার পেছনের হোতাদের খুঁজে বের করতে তদন্ত জোরদার করা হয়েছে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাও কঠোর করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি।

ক্যাস্পিয়ান সাগরের তীরে অবস্থিত দাগেস্তান রাশিয়ার একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এখানে বেশ কয়েকটি সহিংস হামলার ঘটনা ঘটেছে। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের মার্চ মাসে রাশিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী দাগেস্তানে ইসলামিক স্টেটের (আইএসআইএল) চার সন্দেহভাজন সদস্যকে হত্যার দাবি করে, যারা একটি সরকারি স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করছিল। এর আগে গত বছরের জুনে দাগেস্তানে সমন্বিত হামলায় ধর্মীয় উপাসনালয় ও পুলিশ চৌকিতে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছিলেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১৯ সালে ইরাক ও সিরিয়ায় আইএসআইএল পরাজিত ঘোষিত হলেও সংগঠনটির বিভিন্ন শাখা এখনও সক্রিয় রয়েছে এবং দাগেস্তান চরমপন্থার নতুন ঢেউয়ের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।