৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব, না মানলে পুতিনের ওপর কঠোর চাপ!

ইউক্রেনে চলমান দীর্ঘমেয়াদী সংঘাত নিরসনে আগামী সোমবার থেকে ৩০ দিনের জন্য নতুন একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকরের প্রস্তাব দিয়েছে ইউরোপের প্রভাবশালী চারটি দেশ – ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও পোল্যান্ড। শনিবার ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ সফরকালে এই চার দেশের শীর্ষ নেতারা এই আহ্বান জানান। তাদের এই শান্তি উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইউরোপীয় নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, রাশিয়া যদি এই যুদ্ধবিরতি না মানে, তাহলে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর আরও কঠোর চাপ সৃষ্টি করা হবে।

রাশিয়ার পতাকা

ইউক্রেন সফরকারী ইউরোপীয় নেতারা হলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ এবং পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক। কিয়েভে ইউক্রেনীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তারা এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব তুলে ধরেন। সম্মেলনে জানানো হয়, ৩০টিরও বেশি দেশ ইউক্রেন যুদ্ধের একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানে পৌঁছাতে এবং এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে রাজি হয়েছে।

নেতারা আরও জানান, রাশিয়া যদি প্রস্তাবিত এই যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করে বা কার্যকর হওয়ার পর লঙ্ঘন করে, তাহলে দেশটির ওপর বর্তমানে চলমান অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরও তীব্র করা হবে। বিশেষ করে রাশিয়ার জ্বালানি ও ব্যাংকিং খাতকে লক্ষ্য করে কঠোরতর পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।

উল্লেখ্য, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চলছে। এই সংঘাতের একটি শান্তিপূর্ণ সমাপ্তি টানতে ইউরোপের দেশগুলো শুরু থেকেই কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। এবারের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব সেই ধারাবাহিক প্রচেষ্টারই অংশ।

এর আগে, শনিবার রাশিয়ার পক্ষ থেকে ঘোষিত তিন দিনের একতরফা যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে ইউক্রেনের অভিযোগ, এই বিরতিকালেও রুশ বাহিনী একাধিকবার হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে, গত মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকেও ৩০ দিনের একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। ইউক্রেন সেই প্রস্তাবে সম্মত হলেও রাশিয়া কিছু শর্ত জুড়ে দেয় এবং শর্ত পূরণ না হওয়ায় তা মানতে অস্বীকৃতি জানায়।

শনিবার ইউরোপীয় নেতারা স্পষ্ট করেছেন, রাশিয়া নতুন যুদ্ধবিরতির আহ্বানে সাড়া না দিলে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা আরও বাড়ানো হবে। ইউরোপের দেশগুলো কিয়েভকে আরও বেশি পরিমাণে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ করবে। এমনকি, প্রয়োজনে বিদেশি সেনাদের সমন্বয়ে একটি ‘পুতিন বিরোধী’ বিশেষ বাহিনী গঠনের সম্ভাবনার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত এই যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেবে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি জোর দিয়ে বলেন, রাশিয়া যদি এই যুদ্ধবিরতি অমান্য করে, তাহলে প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন ও ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হবে।

সূত্র: স্কাই নিউজ