আপনি পড়ছেন

পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে দুই দেশের মধ্যে অমীমাংসিত বিভিন্ন সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানে গভীর আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। শনিবার (১০ মে) টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এই ভাষণে তিনি সিন্ধু পানি চুক্তি, সন্ত্রাসবাদ এবং জম্মু ও কাশ্মিরসহ প্রধান বিরোধপূর্ণ বিষয়গুলোর শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তির উপর জোর দেন। এই খবর জানিয়েছে এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

shahbaj sharif 1পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ

প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ তার ভাষণে বলেন, ‘পাকিস্তানের ২৩ কোটি নাগরিকের বৃহত্তর স্বার্থে আমরা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ইতিবাচকভাবে সাড়া দিয়েছি।’ তিনি উল্লেখ করেন, গত মাসের ২২ তারিখে ভারত-শাসিত কাশ্মিরের পাহেলগামে সংঘটিত ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর সৃষ্ট সামরিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এই যুদ্ধবিরতি অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল। এই যুদ্ধবিরতি প্রক্রিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

শাহবাজ শরিফ আরও বলেন, ‘আমরা কেবল ভারতের ভিত্তিহীন অভিযোগই প্রত্যাখ্যান করিনি, বরং ওই হামলার বিষয়ে একটি আন্তর্জাতিক তদন্তেরও প্রস্তাব দিয়েছি।’ উল্লেখ্য, পাহেলগাম হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে, যা ইসলামাবাদ সরকার প্রত্যাখ্যান করে।

এই উত্তেজনার জের ধরে ভারত সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দেয় এবং পরবর্তীতে ৬ ও ৭ মে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ছয়টি স্থানে বিমান হামলা চালায় বলে ভাষণে উল্লেখ করা হয়। পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রীর ভাষ্যমতে, এই হামলায় অন্তত ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৭১ জন আহত হন।

টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ব্যক্তিগতভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তার ‘আন্তরিক ও গঠনমূলক ভূমিকা পালনের জন্য’ ধন্যবাদ জানান। এছাড়া, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, তুরস্ক, কুয়েত, যুক্তরাজ্য, জাতিসংঘের মহাসচিব এবং অন্যান্য বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র যারা এই কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় সহায়তা করেছে, তাদের প্রতিও তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তিনি বিশেষভাবে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান, শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ, কাতারের আমির শেখ তামিম এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ানের নাম উল্লেখ করে বলেন, ‘এই কঠিন সময়ে তারা আমাদের সাহস ও আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছেন।’ চীনের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চীন লাভ-ক্ষতির ঊর্ধ্বে উঠে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে। তারা আমাদের ৭৮ বছরের পরীক্ষিত বন্ধু। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও চীনা জনগণের এই সমর্থন আমরা কখনো ভুলব না।’

প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর নেতৃত্বের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘আমি পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানসহ আমাদের সকল সাহসী সৈন্যকে স্যালুট জানাই।’ তিনি জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ, সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির, বিমানবাহিনী প্রধান ও নৌবাহিনী প্রধানকে ধন্যবাদ জানান। বিমানবাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘আমাদের শাহিনরা (বিমানবাহিনীর পাইলট) শত্রুর রাফায়েল জেটগুলোকে অকার্যকর করে দিয়েছিল এবং কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ভারতীয় সেনাবাহিনীর গোলাবর্ষণ থামিয়ে দিয়েছিল। আমরা একটি মর্যাদাপূর্ণ জাতি হিসেবে সমুচিত জবাব দিয়েছি।’

পাকিস্তানি জনগণের ইস্পাতকঠিন ঐক্যের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘সশস্ত্র বাহিনীর সমর্থনে পুরো জাতি ঐক্যবদ্ধ ছিল।’ তিনি নওয়াজ শরিফ ও আসিফ আলি জারদারিসহ সকল রাজনৈতিক নেতার ভূমিকারও প্রশংসা করেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় যারা 'মিথ্যা প্রচার' রুখে দাঁড়িয়েছেন, তাদের তিনি 'সত্যিকারের ডিজিটাল যোদ্ধা' হিসেবে অভিহিত করেন।

ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আত্মবিশ্বাসী শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘আমরা শুধু শান্তির পথেই অগ্রসর হচ্ছি না, বরং পাকিস্তানকে তার প্রকৃত মর্যাদার আসনে পুনঃস্থাপিত করতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আসুন, আমরা এমনভাবে পরিশ্রম করি যাতে বিশ্ব আমাদের স্যালুট জানায়, যেমনটি আজ তারা আমাদের সেনাবাহিনীকে জানাচ্ছে।’

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সূত্রের বরাত দিয়ে ভাষণে আরও উল্লেখ করা হয় যে, এই স্বল্পকালীন সংঘাতে ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান (যার মধ্যে তিনটি রাফাল) এবং একটি হেরন ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। এছাড়া, পাকিস্তানের পাল্টা হামলায় ভারতের আখনুর, বাথিন্ডা ও সিরসা বিমানঘাঁটি এবং বিয়াসের ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং পাকিস্তানি জেএফ-১৭ থান্ডার বিমান আদমপুরে ভারতের এস-৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও ধ্বংস করেছে বলে দাবি করা হয়।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.