গাজায় প্রতি ৫ জনে ১ জন দুর্ভিক্ষের শিকার

গাজা উপত্যকাকে অবরুদ্ধ করে প্রতিনিয়ত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। একদিকে গুলি-বোমায় মানুষ মরছে, তেমনি মারা পড়ছে না খেয়ে। জাতিসংঘের সহযোগী আন্তর্জাতিক সংস্থা আইপিসি জানিয়েছে, গাজার প্রতি পাঁচজনে একজন মানুষ দুর্ভিক্ষের শিকার হয়েছে। খবর আল জাজিরার।

অবরুদ্ধ গাজায় দেখা দিয়েছে দুর্ভিক্ষ

বিশ্বের ক্ষুধা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকারী শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক সংস্থা- ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার পুরো জনগোষ্ঠী খাদ্য ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছে। তাদের প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন।

আইপিসির এই প্রতিবেদন দেওয়ার একদিনের মাথায় গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।

আইপিসি রিপোর্টে বলা হয়েছে, গাজার মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৯ লাখ ৫০ হাজার, অর্থাৎ ৯৩ শতাংশ মানুষই তীব্র খাদ্য ঘাটতির মধ্যে বসবাস করছে। তাদের মধ্যে ২ লাখ ৪৪ হাজার মানুষ, অর্থাৎ জনসংখ্যার ১২ শতাংশ খাদ্য ঘাটতিতে সবচেয়ে ‘বিপর্যয়কর’ পরিস্থিতির সম্মুখীন।

এর আগে আইপিসির অক্টোবরের বিশ্লেষণে বলা হয়েছিল, ১ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে রয়েছে। এটি দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতির পাঁচ-স্তরের স্কেলের পঞ্চম বা সর্বশেষ স্তরকে বোঝায়।

পরিস্থিতি চলতে থাকলে আগামী সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ প্রায় ৪ লাখ ৭০ হাজার মানুষ, অর্থাৎ জনসংখ্যার ২২ শতাংশ, বিপর্যয়কর শ্রেণীতে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আগামী চার মাসের মাথায় গাজার দশ লাখের বেশি মানুষ দুর্ভিক্ষের ‘জরুরি’ স্তরে থাকবেন, যা আইপিসির স্কেলে চতুর্থ স্তর।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্ত, পুরো গাজা অঞ্চলকে জরুরি অবস্থায় (আইপিসি চতুর্থ স্তর) শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। এরইমধ্যে তারা খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার (আইপিসি পর্যায় ৩) চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

পুরো গাজা উপত্যকাকে তিন মাসের বেশি সময় ধরে সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ অবস্থায় রেখেছে ইসরায়েল। সেখানকার কোনো মানুষের জন্য জাতিসংঘ বা আন্তর্জাতিক কোনো মানবিক ত্রাণও আসতে দিচ্ছে না। এতেই গাজায় দেখা দিয়েছে খাদ্য-পানির হাহাকার।

এরইমধ্যে প্রতিদিনই বিমান থেকে বোমা হামলা চালিয়ে মানুষ হত্যা করছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। গত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে টানা ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ৫৩ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। আহত হয়েছে আরও সোয়া লাখ ফিলিস্তিনি।