গাজা যুদ্ধে ‘অবিশ্বাস্য’ কার্বন বিপর্যয়: ১০০টি দেশের বার্ষিক নিঃসরণের চেয়েও বেশি!
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইসরায়েলের গাজা যুদ্ধ কেবল মানবিক বিপর্যয়ই ডেকে আনেনি, পরিবেশের ওপরও ফেলছে মারাত্মক প্রভাব। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে, গাজায় চলমান যুদ্ধ এবং এর পরবর্তী পুনর্নির্মাণ প্রক্রিয়ায় যে বিপুল পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ হবে, তা বিশ্বের প্রায় ১০০টি দেশের সম্মিলিত বার্ষিক কার্বন নিঃসরণের সমান। এই তথ্য জানিয়েছে আরব নিউজ।
গাজা পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে
যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকদের পরিচালিত এক যৌথ সমীক্ষায় দেখা গেছে, গাজার ধ্বংসযজ্ঞ, ধ্বংসস্তূপ অপসারণ এবং পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় মোট ৩১ মিলিয়ন টন কার্বন ডাই-অক্সাইড সমতুল্য গ্যাস নিঃসৃত হতে পারে। গবেষণাটি সম্প্রতি সোশ্যাল সায়েন্স রিসার্চ নেটওয়ার্ক এবং দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, গাজা যুদ্ধের প্রথম ১৫ মাসেই যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ হয়েছে, তা কোস্টারিকা ও এস্তোনিয়ার মতো দেশের বার্ষিক সম্মিলিত কার্বন নিঃসরণের চেয়েও বেশি। উদ্বেগজনকভাবে, এই যুদ্ধের মোট কার্বন নিঃসরণের ৯৯ শতাংশেরও বেশির জন্য দায়ী ইসরায়েলের ব্যাপক বোমা হামলা ও স্থল অভিযান। এর মধ্যে ইসরায়েলি ট্যাংক, গোলাবারুদ, অস্ত্র ও অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম থেকে নিঃসৃত হয়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ কার্বন। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইউরোপের বিভিন্ন সামরিক ভাণ্ডার হয়ে ইসরায়েলে নিয়মিত অস্ত্র ও সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য পরিচালিত বিমানের কারণে প্রায় ৩০ শতাংশ গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ হয়েছে। অন্যদিকে, হামাসের রকেট নিক্ষেপ ও বাঙ্কার পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত জ্বালানি থেকে মাত্র তিন হাজার টন কার্বন নিঃসরণ হয়েছে, যা মোট নিঃসরণের মাত্র শূন্য দশমিক দুই শতাংশ।
গবেষণা প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, গাজা ভূখণ্ডে বর্তমানে প্রায় ৬ কোটি টন বিষাক্ত ধ্বংসাবশেষ জমে উঠেছে। এই বিপুল পরিমাণ ধ্বংসস্তূপ অপসারণ এবং ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৪ লক্ষ ৩৬ হাজার অ্যাপার্টমেন্ট, রাস্তাঘাট, স্কুল, মসজিদ ও সরকারি দপ্তর পুনর্নির্মাণে আরও প্রায় ২৯ দশমিক ৪ মিলিয়ন টন কার্বন নিঃসরণ হবে। এই সামগ্রিক কার্বন নিঃসরণের ভয়াবহতা বোঝাতে গিয়ে গবেষকরা বলেছেন, এটি ২৬০ কোটি স্মার্টফোন চার্জ দেওয়া অথবা ৮৪টি গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এক বছর ধরে চালানোর ফলে যে পরিবেশগত ক্ষতি হয়, তার সমান।
গবেষকরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, জাতিসংঘের কাছে রাষ্ট্রগুলোর সামরিক কার্যক্রমের ফলে সৃষ্ট কার্বন নিঃসরণের হিসাব দাখিল করার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এই জবাবদিহিতার অভাবের কারণে বৈশ্বিক মোট কার্বন নিঃসরণের হিসাব প্রকৃত পরিমাণের চেয়ে অনেক কম দেখানো হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে ফিলিস্তিনি নীতি বিশ্লেষণ নেটওয়ার্ক আল-শাবাকার বিশ্লেষক জেনা আগা মন্তব্য করেছেন, ‘এই প্রতিবেদন ইসরায়েলের গণহত্যামূলক অভিযানের পরিবেশগত ধ্বংসলীলার ভয়াবহ চিত্র আমাদের সামনে তুলে ধরেছে। তবে এটি শুধু ইসরায়েলের যুদ্ধ নয়; যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নেরও যুদ্ধ, যারা ইসরায়েলকে অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ করে এই ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত রাখতে সহায়তা করছে।’
ফিলিস্তিনি পরিবেশ সংস্থার জলবায়ু পরিবর্তন দপ্তরের প্রধান হাদিল ইখমাইস বলেন, ‘যুদ্ধ কেবল মানুষের জীবনই কেড়ে নেয় না, এটি বিষাক্ত রাসায়নিক ছড়িয়ে মাটি, পানি ও বায়ুকে দূষিত করে এবং পরিবেশগত বিপর্যয়কে আরও ত্বরান্বিত করে। কিন্তু সামরিক কার্বন নিঃসরণের হিসাব না রাখার সুযোগে রাষ্ট্রগুলো এই গুরুতর অপরাধের দায়ভার এড়িয়ে যাচ্ছে।’
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.