স্পেনের স্বপ্নভঙ্গ, রাজত্বে ফিরল রোনালদোর পর্তুগাল

দুইবার এগিয়ে থেকেও জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারল না তারুণ্যে ঠাসা স্পেন। রোববার রাতে উয়েফা নেশনস লিগের ফাইনালে দুবারই ফিরে এসেছে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল; মিউনিখের শিরোপা লড়াই নিয়ে গেছে অতিরিক্ত সময়ে। এরপর টাইব্রেকারে বাজিমাত করে পর্তুগিজরা ফিরল রাজত্বে; দ্বিতীয়বারের মতো দলটি জিতল শিরোপা। এর আগে ২০১৯ সালে নেশনস লিগের প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা।

পর্তুগালের উয়েফা নেশনস লিগ জয়ের অন্যতম নায়ক অধিনায়ক ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ছবি: এক্স

বায়ার্ন মিউনিখের মাঠ এলিয়েঞ্জ এরিনায় ফাইনালের ৬১ মিনিট পর্যন্ত স্কোরলাইন ছিল ২-২। নির্ধারিত ৯০ মিনিট পর ফলটা একই থাকল। অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের খেলায়ও ফলটা পাল্টায়নি। ফাইনাল গড়ায় পেনাল্টি শুটআউটে। সেখানে স্পেনকে ৫-৩ গোলে হারিয়ে উৎসবে মেতে ওঠে পর্তুগাল। টাইব্রেকারে পর্তুগিজদের হয়ে গোল করেন রামোস, ভিতিনহা, ফার্নান্দেজ, মেন্ডিস ও নেভেস।

বিপরীতে স্পট কিক থেকে স্পেনের তিনটি গোল করেন মেরিনো, বায়েনা ও ইসকো। চতুর্থ শট নিতে এসেই মিস করেন আলভারো মোরাটা। তাতেই ভেঙে গেল শিরোপা স্বপ্ন। এই হারের মধ্য দিয়ে শিরোপা ধরে রাখার ব্যর্থ মিশন শেষ হলো স্প্যানিয়ার্ডদের। স্পেন-পর্তুগাল ছাড়া নেশনস লিগের চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল কেবল ফ্রান্স। এবার জার্মানিকে হারিয়ে ফরাসিরা তৃতীয় সেরার দলের মর্যাদা পেয়েছে।

ফাইনালের ২১ মিনিটে লিড নেয় স্পেন। গোল করেন মার্টিন জুবিমেন্ডি। পাঁচ মিনিটের মধ্যে সমতায় ফেরে পর্তুগাল। তাদের সমতায় ফেরান নুনো মেন্ডিস। বিরতির বাঁশির আগে ফের এগিয়ে যায় স্প্যনিয়ার্ডরা। এবার গোল করেন মিকেল ওয়্যারজাবাল। প্রথমার্ধের শেষ সময়ে গিয়ে দ্বিতীয় গোলের দেখা পায় লা রোজারা। বিরতির পর ম্যাচে দ্বিতীয়বার সমতায় ফেরে পর্তুগাল।

ম্যাচের বয়স এক ঘণ্টা পার হওয়ার পর পর্তুগিজদের সমতায় ফেরান অধিনায়ক রোনালদো। সেমিফাইনালের দ্বিতীয়ার্ধেও গোল করেছিলেন তিনি। সেটি ছিল জার্মানির বিপক্ষে জয়সূচক গোল। রোনালদোর ওই গোলের ওপর দাঁড়িয়ে ২৫ বছর পর জার্মানদের বিপক্ষে জয়খরা ঘুচিয়েছিল পর্তুগাল। বয়স যে স্রেফ একটা সংখ্যা সেটি পরপর দুটি বড় ম্যাচে বুঝিয়ে দিলেন রোনালদো। অথচ ১০৬ মিনিট অবধি খেলা স্পেনের ইয়ামাল ম্যাচজুড়ে নিজেকে হারিয়ে খুঁজেছেন।

পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ারে হাজার গোল স্পর্শ করতে চান 'সিআর সেভেন'। স্বপ্নযাত্রায় কাল আরেকটু এগোলেন তিনি। ক্যারিয়ারে রোনালদোর গোল এখন ৯৩৮টি। তিনি মোট ম্যাচ খেলেছেন ১২৫০টি। এর মধ্যে পর্তুগালের জার্সিতেই তার গোল হলো ১৩৮টি। যা আন্তর্জাতিক ফুটবলে কোনো খেলোয়াড়ের সর্বোচ্চ। তার ধারেকাছেও কেউ নেই। রোনালদো দেশের হয়ে প্রথমবার গোল করেছিলেন ২০০৩ সালে।

ফুটবলের ইতিহাসে হাজার গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন কেবল দুজন। দুজনই ব্রাজিলের কিংবদন্তি। একজন পেলে, অন্যজন রোমারিও। দুজনেরই অবশ্য অনেক আনঅফিসিয়াল গোল আছে। রোনালদোর সব গোলই অফিসিয়াল। যদি সবকিছু ঠিক থাকে তাহলে অফিসিয়ালি হাজার গোল করা প্রথম ফুটবলার হতে যাচ্ছেন পর্তুগাল অধিনায়ক।