স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা: রিমান্ড হবে স্বচ্ছ কাচের ঘরে, দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স

এখন থেকে আসামিদের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তৈরি করা হবে কাচের মতো স্বচ্ছ ঘর। এর ফলে বাইরে থেকে সবাই দেখতে পারবেন আসামির সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ করা হচ্ছে কি না। পুলিশি ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের সংস্কারের ইঙ্গিত দিয়ে এসব কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী

মঙ্গলবার (১০ মে) সকালে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গাছা থানা পরিদর্শনে গিয়ে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

পুলিশি সেবা জনগণের জন্য আরও সহজ করতে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। উপদেষ্টা বলেন, ‘আগে জিডি বা মামলা করতে থানায় গিয়ে সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হতেন। এখন ঘরে বসেই অনলাইনে জিডি করা যাচ্ছে এবং মামলার আবেদন প্রক্রিয়াও অনলাইনে সম্পন্ন করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ফলে মানুষকে আর থানায় যেতে হবে না, হয়রানিও কমবে।’

পুলিশ বাহিনীর ভেতরে দুর্নীতি কঠোর হাতে দমনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘মামলা বাণিজ্য বা যেকোনো ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এরই মধ্যে বিভিন্ন পদমর্যাদার প্রায় ৮৪ জন পুলিশ সদস্যকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে সংযুক্ত (অ্যাটাচ) করা হয়েছে এবং ৩০-৪০ জনকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আরও ৩০-৪০ জনকে বাড়ি পাঠাতেও কুণ্ঠাবোধ করব না।’

৫ আগস্ট পরবর্তী সহিংসতার মামলাগুলোর তদন্তে দেরি হওয়ার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি উল্লেখ করেন, এসব মামলায় অল্প কয়েকজনের নাম দিয়ে শত শত বেনামি ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এর ফলে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করতে এবং নিরীহ ব্যক্তিদের আলাদা করতে সময় লাগছে।

দুর্নীতিকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি আমাদের সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করেছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে আমি সাংবাদিকদের সহযোগিতা চাই। আপনারা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে জনসচেতনতা তৈরি করলে অনেক কিছু ঠিক হয়ে যাবে।’

গাছা থানা পরিদর্শনকালে তার সঙ্গে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ড. নাজমুল করিম খানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।