রাশিয়ার পাশে কিম: ইউক্রেন সীমান্তে যাচ্ছে ৬ হাজার উত্তর কোরীয় সেনা

রাশিয়ার সঙ্গে করা ‘সার্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি’ অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোকে সরাসরি সহায়তা করতে দেশটিতে ৬ হাজার সেনা পাঠানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিয়ংইয়ং। এই পদক্ষেপে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে একে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশনের ‘সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেছে দক্ষিণ কোরিয়া।

কিম জং উন ও ভ্লাদিমির পুতিন

বুধবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) জানিয়েছে, মঙ্গলবার পিয়ংইয়ংয়ে সফররত রাশিয়ার নিরাপত্তা প্রধান সের্গেই শোইগুর সঙ্গে এক বৈঠকে কিম জং উন এই প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

বৈঠকে কিম বলেন, সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে রাশিয়ার সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার রক্ষার লড়াইয়ে পিয়ংইয়ং ‘অবিচল ও নিঃশর্তভাবে’ মস্কোর পাশে থাকবে।

এই ঘোষণার পরপরই ইউক্রেন সীমান্তবর্তী রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে ৬ হাজার উত্তর কোরীয় সেনা পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রুশ নিরাপত্তা প্রধান সের্গেই শোইগু জানিয়েছেন, এই বাহিনীর মধ্যে ১,০০০ জন কমব্যাট ইঞ্জিনিয়ার এবং ৫,০০০ জন সেনা প্রকৌশল কোরের সদস্য থাকবেন। তারা মূলত কুরস্ক অঞ্চলে মাইন অপসারণ এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত অবকাঠামো পুনর্গঠনের কাজে সহায়তা করবেন। তিনি আরও জানান, ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো পুনরুদ্ধারের জন্য ৫,০০০ সেনার দুটি ব্রিগেড পাঠানো হবে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের জুনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পিয়ংইয়ং সফরে কিম জং উনের সঙ্গে এই ঐতিহাসিক অংশীদারিত্ব চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। চুক্তি অনুযায়ী, স্বাক্ষরকারী কোনো দেশ তৃতীয় পক্ষের দ্বারা আক্রান্ত হলে অন্য দেশ তাকে সামরিক সহায়তা প্রদান করতে বাধ্য থাকবে।

মাত্র দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে এটি ছিল সের্গেই শোইগুর দ্বিতীয় পিয়ংইয়ং সফর। এর আগে গত ৪ জুন তিনি উত্তর কোরিয়া সফর করেন। চুক্তির প্রথম বার্ষিকী উদযাপনের মাসেই এই ঘন ঘন সফর দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সামরিক ঘনিষ্ঠতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

কেসিএনএ আরও জানায়, বৈঠকে কিম জং উন রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তির বিষয়বস্তুগুলো ‘নিশ্চিত’ করেছেন এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতার পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। কুরস্ক এলাকা মুক্ত করার অভিযানে উত্তর কোরীয় সেনাদের বীরত্বপূর্ণ কীর্তি স্মরণীয় করে রাখতে বিভিন্ন পরিকল্পনাও বৈঠকে অনুমোদিত হয়।

এদিকে, উত্তর কোরিয়ার এই পদক্ষেপে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। বুধবার সিউলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, “উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার মধ্যে চলমান অবৈধ সহযোগিতায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা পিয়ংইয়ংকে অবিলম্বে এই ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি।”