আপনি পড়ছেন

ইরানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই নিজেদের একটি হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ইরানকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ আখ্যা দিয়ে চরম মূল্য নেওয়ার হুমকি দিয়েছে ইসরায়েল। অথচ গত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে গাজার প্রায় পুরো স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে খোদ ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েলের এই দ্বিমুখী নীতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে।

israels hospital strike by iranইরানের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হাসপাতাল

গত বুধবার (১৮ জুন) ভোরে ইরানের পাল্টা হামলায় দক্ষিণ ইসরায়েলের বিয়ারশেভা শহরের সোরোকা মেডিকেল সেন্টার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইসরায়েলের চ্যানেল ১২-এর প্রচারিত ভিডিওতে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ধ্বংসযজ্ঞ এবং আতঙ্কিত রোগী ও কর্মীদের ছোটাছুটি করতে দেখা যায়। ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটিকে সরাসরি হামলা বললেও ইরানের দাবি, একটি সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানোর সময় হাসপাতালটি সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইসরায়েলি নেতারা তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘তেহরানের শাসকগোষ্ঠীকে এর চরম মূল্য দিতে হবে।’ প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে ‘আধুনিক হিটলার’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘তার আর পৃথিবীতে থাকা উচিত নয়।’ স্বাস্থ্যমন্ত্রী এই হামলাকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ এবং জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির বলেন, ‘ইরান নাৎসিদের মতো আচরণ করছে।’

তবে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্যানুসারে, সোরোকা মেডিকেল সেন্টার শুধু একটি সাধারণ হাসপাতাল নয়, এটি ইসরায়েলের অন্যতম প্রধান সামরিক চিকিৎসাকেন্দ্র। এখানে গাজায় আহত ইসরায়েলি সেনাদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন করা হয়। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, এটিকে ‘দ্বৈত ব্যবহারযোগ্য স্থাপনা’ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। ঠিক একই অজুহাতে ইসরায়েল গাজার অসংখ্য হাসপাতাল ধ্বংস করেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী গাজার অন্তত ৩২টি হাসপাতাল ও ৫৩টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র পুরোপুরি ধ্বংস করেছে। আশ-শিফা, নাসের, ইন্দোনেশিয়ান ও আল-কুদসের মতো বড় হাসপাতালগুলোতে চালানো হামলা ছিল ভয়াবহ। বিদ্যুৎ ও অক্সিজেনের অভাবে মারা গেছে বহু নবজাতক, নিহত ও গ্রেপ্তার হয়েছেন অনেক চিকিৎসক।

গাজার হাসপাতালগুলোতে হামলার পেছনে ইসরায়েলের একটাই ব্যাখ্যা ছিল—হামাস এগুলোকে কমান্ড সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করছে। তবে এই দাবির পক্ষে তারা কখনোই সুস্পষ্ট প্রমাণ দেখাতে পারেনি। এরপরও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা বিশ্ব ইসরায়েলের এই ব্যাখ্যাকেই সমর্থন জুগিয়েছে এবং গাজার ধ্বংসযজ্ঞকে ‘যুদ্ধের অনিবার্য পরিণতি’ বলে আখ্যা দিয়েছে।

আন্তর্জাতিক যুদ্ধ বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজার হাসপাতাল ধ্বংসকে ন্যায্যতা দিয়ে নিজেদের একটি সামরিক হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ বলা ইসরায়েলের দ্বিচারিতারই প্রমাণ। এই দ্বিমুখী নীতি বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখনই জোরালো ভূমিকা না নিলে নিরীহ মানুষের মৃত্যুর মিছিল কেবল দীর্ঘ হবে।

টিআরটি গ্লোবাল অবলম্বনে

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.