ইরানকে আলোচনার টেবিলে রাখতে ইউরোপের জোর তৎপরতা
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা নিরসন এবং পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা পুনরায় শুরু করার লক্ষ্যে জেনেভায় ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন শীর্ষ ইউরোপীয় কূটনীতিকরা। শুক্রবার অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে তেহরানের সঙ্গে সংলাপ অব্যাহত রাখার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করেছেন তারা।
বৈঠকের ছবি
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির সঙ্গে এই বৈঠকে অংশ নেন যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক প্রধান কাজা কালাস।
উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় ইসরায়েল হামলা চালালে পাল্টা জবাব দেয় ইরান। এরপর থেকে উভয় পক্ষের মধ্যে থেমে থেমে হামলা-পাল্টা হামলা চলছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা শুরু হয়েছিল।
বৈঠক শেষে ইইউর পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক প্রধান কাজা কালাস বলেন, এই আলোচনায় এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, ‘আঞ্চলিক উত্তেজনা বৃদ্ধি কারও জন্যই লাভজনক নয়।’ তিনি তেহরানের সঙ্গে আলোচনার পথ খোলা রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পারমাণবিক কর্মসূচির পাশাপাশি অন্যান্য বৃহত্তর বিষয় নিয়েও আলোচনা করতে সম্মত হয়েছি এবং অগ্রগতি অর্জনের জন্য আলোচনা উন্মুক্ত রাখব।’
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি একই সুরে কথা বলেন এবং তেহরানকে আলোচনার টেবিলে থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘এটি একটি সংকটময় মুহূর্ত, এবং এই সংঘাতের আঞ্চলিক বিস্তার যাতে না ঘটে, তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ইরানের সঙ্গে চলমান আলোচনা অব্যাহত রাখতে আগ্রহী এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য তেহরানকে অনুরোধ করছি।’
উত্তেজনা বৃদ্ধির ‘চরম মূল্য’ দিতে হবে
ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল বারো জোর দিয়ে বলেন যে, এই উদ্যোগটি প্রধান মিত্রদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় করে নেওয়া হয়েছে এবং এটি বৃহত্তর আলোচনার ভিত্তি স্থাপন করতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, এই কূটনৈতিক উদ্যোগ আলোচনার পথ প্রশস্ত করবে। এই সংকট শুধু মধ্যপ্রাচ্যের জন্য নয়, ইউরোপের জন্যও ঝুঁকি বহন করে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া ‘দুই সপ্তাহের আল্টিমেটাম’ এবং সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বারো বলেন, একমাত্র আলোচনাই ‘এই বড় নিরাপত্তা সমস্যার সমাধান করতে পারে।’ তিনি উত্তেজনা বৃদ্ধির ‘চরম মূল্য’ সম্পর্কে সতর্ক করে দেন, যা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য সুদূরপ্রসারী পরিণতি বয়ে আনবে।
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ওয়াডেপুল আলোচনাকে ‘গুরুত্বপূর্ণ ও গঠনমূলক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আজকের আলোচনার ইতিবাচক দিক হলো, ইরানি পক্ষ মৌলিকভাবে সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে ইচ্ছুক বলে আমাদের মনে হয়েছে। তবে এই আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ ওয়াডেপুল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে জার্মানির উদ্বেগের কথাও তুলে ধরেন এবং ইসরায়েলের নিরাপত্তার প্রতি বার্লিনের প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
বৈঠক শেষে ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের (ই৩) পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এবং ইইউর পররাষ্ট্র প্রধান এক যৌথ বিবৃতিতে "ইসরায়েলের নিরাপত্তার প্রতি তাদের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি" পুনর্ব্যক্ত করেন এবং সংকট আরও গভীর করতে পারে এমন পদক্ষেপ এড়াতে সব পক্ষকে আহ্বান জানান। তারা বলেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির "কোনো বিশ্বাসযোগ্য বেসামরিক উদ্দেশ্য নেই" এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সঙ্গে তেহরানকে পুরোপুরি সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
‘আগ্রাসন’ বন্ধ হলে আলোচনায় প্রস্তুত ইরান
আলোচনা শেষে এক পৃথক সংবাদ সম্মেলনে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেন, তার দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ‘আলোচনার যোগ্য নয়’। তিনি ইসরায়েলের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘আগ্রাসন বন্ধ হলে এবং আগ্রাসনকারীকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হলে ইরান আবারও কূটনীতির বিষয়টি বিবেচনা করতে প্রস্তুত।’ ইরানের ওপর হামলার নিন্দা না করায় তিনি ই৩ এবং ইইউর সমালোচনাও করেন। তবে তিনি ইইউ ও ই৩-এর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে একতরফাভাবে প্রত্যাহার করে নেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরান বরাবরই দাবি করে আসছে যে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত। সম্প্রতি ট্রাম্প বলেছেন, তেহরানের ওপর ইসরায়েলি হামলায় যোগ দেওয়ার বিষয়ে তিনি দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.