কিয়েভে রাশিয়ার বিমান হামলায় নিহত ৯, আহত বহু

রাশিয়ার চালানো রাতভর ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ এবং আশপাশের এলাকায় অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইহোর কিলেমেনকো। হামলায় বসতবাড়ি, হাসপাতাল ও ক্রীড়া অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু হয়েছে বলে এক সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া বার্তায় জানান তিনি। খবর বিবিসি।

রাশিয়ার হামলায় বিধ্বস্ত ভবনে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন উদ্ধারকর্মীরা।

কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিৎসকো জানান, নিহতদের মধ্যে অন্তত ৬ জন রাজধানীর একটি বহুতল ভবনের বাসিন্দা। কিয়েভ সামরিক প্রশাসনের তথ্যে, হামলায় ৩৩ জন আহত হয়েছেন।

এদিকে ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানায়, সোমবার (২৩ জুন) ভোররাতে চালানো সর্বশেষ হামলায় রাশিয়া ৩৫২টি ড্রোন ও ১৬টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যার বেশির ভাগই কিয়েভ অঞ্চলের দিকে।

সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার এমন তীব্র ও সমন্বিত বিমান হামলার প্রবণতা বেড়েছে। এতে ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও ভুয়া লক্ষ্যবস্তু একযোগে ব্যবহার করে ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

সোমবারের হামলায় হাজার হাজার মানুষ কিয়েভ শহরের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। ইউক্রেনের জরুরি বিভাগের প্রকাশ করা ভিডিওতে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত একটি বহুতল ভবনের বাসিন্দাদের উদ্ধার করে বের করে আনা হচ্ছে, যেখানে এখনো আগুন জ্বলছিল।

এ ছাড়া রাজধানী কিয়েভের দক্ষিণের শহর বিলা সারকভায় একটি হাসপাতালে ড্রোন হামলায় আরও একজন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

ইউক্রেনের সামরিক প্রধান ওলেক্সান্ডার সিরস্কি বলেন, ইউক্রেন শুধু প্রতিরক্ষা নয়, আক্রমণাত্মক কৌশলেও জোর দেবে। তিনি বলেন, “শুধু রক্ষণাত্মক অবস্থানে থাকলে আমরা ধীরে ধীরে পিছিয়ে পড়ি, মানুষ ও এলাকা হারাই।”

এই হামলার মাত্র এক সপ্তাহ আগেই আরেকটি ভয়াবহ রাশিয়ার বিমান হামলায় ২৮ জন নিহত ও শতাধিক মানুষ আহত হয়েছিলেন, যা ফেব্রুয়ারি ২০২২ সালে যুদ্ধ শুরুর পর কিয়েভে অন্যতম বড় হামলা।

এদিকে, সোমবার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে সামরিক সহায়তা নিয়ে বৈঠক করতে লন্ডন যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি মঙ্গলবার নেদারল্যান্ডসে শুরু হওয়া ন্যাটো সম্মেলনের নৈশভোজেও অংশ নেবেন।

তবে, জেলেনস্কির সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈঠকটি বাতিল হয়ে গেছে, কারণ তিনি মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে জি-৭ সম্মেলন থেকে আগেভাগেই চলে গেছেন।

এছাড়া, ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে সরাসরি শান্তি আলোচনা তিন সপ্তাহ ধরে বন্ধ রয়েছে। সর্বশেষ আলোচনায় কেবল বন্দি ও মৃতদেহ বিনিময়ের বিষয়ে সীমিত অগ্রগতি হয়েছে, তবে নতুন কোনো শান্তি আলোচনা এখনো নির্ধারিত হয়নি।