গাজায় ত্রাণকেন্দ্রে হামলা: ইসরায়েলের স্বীকারোক্তির পরেও সহায়তা চালিয়ে যাবে যুক্তরাষ্ট্র

গাজায় ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি হামলায় বেসামরিক নাগরিক হতাহতের ঘটনা স্বীকার করার পরেও উপত্যকাটিতে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম বন্ধ করবে না যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এই অবস্থান স্পষ্ট করেছে। ওয়াশিংটন জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলের তদন্ত প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানায় এবং পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রাখবে।

ট্যামি ব্রুস

সোমবার একটি দৈনন্দিন সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ় অবস্থানের কথা জানান। গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনকে (জিএইচএফ) দেওয়া মার্কিন সহায়তা পুনর্বিবেচনা করা হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, এর উত্তরটি নিশ্চিতভাবেই 'না'।’

ট্যামি ব্রুস আরও বলেন, ‘ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং ইসরায়েল সরকার ঘোষণা করেছে যে তারা নির্দিষ্ট কিছু ঘটনা তদন্ত করছে।’ একইসঙ্গে তিনি গাজার বর্তমান পরিস্থিতির জন্য হামাসকে দায়ী করে বলেন, ‘এটি মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য একটি উপযুক্ত সময় যে, গাজার বর্তমান পরিস্থিতির জন্য হামাসই দায়ী।’

উল্লেখ্য, সোমবারই ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী স্বীকার করে যে গাজায় ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলিতে তাদের হামলায় বেসামরিক নাগরিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা জানায়, এই ঘটনার পর তাদের বাহিনীকে নতুন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সহকারী মহাসচিব খালেদ খিয়ারি সোমবার জানিয়েছেন, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৭ জুন থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৫৮০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তারা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের বিতরণ কেন্দ্রে পৌঁছানোর চেষ্টা করার সময় বা অন্যান্য ত্রাণবাহী গাড়িবহরের জন্য অপেক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ হারান।

মার্কিন মুখপাত্র জানান, গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন এখন পর্যন্ত গাজার চারটি স্থানে প্রায় ৫ কোটি ১০ লক্ষ খাবারের প্যাকেট বিতরণ করেছে। তিনি বলেন, ‘কাজটি মোটেও সহজ নয়। মাঠ পর্যায়ে এমন অনেকে রয়েছে যারা এই উদ্যোগের সাফল্য চায় না এবং কয়েক দশক ধরে গাজার মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে।’

ট্যামি ব্রুস বেসামরিক প্রাণহানির ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা প্রাণহানির ঘটনায় শোক প্রকাশ করি এবং চলমান সহিংসতার নিন্দা জানাই। তবে একারণেই আমরা আমাদের কাজ করে যাচ্ছি এবং একটি যুদ্ধবিরতির জন্যও প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।’

তিনি সবশেষে যোগ করেন যে, ইসরায়েল এই ঘটনাগুলো তদন্ত করে ‘সঠিক কাজটিই’ করছে এবং যুক্তরাষ্ট্র পুরো বিষয়টি ‘পর্যবেক্ষণে রাখবে’।