আপনি পড়ছেন

থাইল্যান্ডে রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে। দেশটির সাংবিধানিক আদালত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে তার দায়িত্ব থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে। এক ফোনালাপ ফাঁসের জেরে তার বিরুদ্ধে অসততা ও সাংবিধানিক নীতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠার পর আদালত এই রায় দেয়। এই আদেশের ফলে দেশটির ক্ষমতাসীন জোট সরকার তীব্র চাপের মুখে পড়ল।

paetongtarn shinawatra 1পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা

৩৬ জন সেনেটরের করা একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত এই মামলাটি গ্রহণ করে। আবেদনে অভিযোগ করা হয়, কম্বোডিয়ার প্রভাবশালী সাবেক নেতা হুন সেনের সঙ্গে একটি রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় পেতংতার্ন সাংবিধানিক সততা ও নৈতিকতার মানদণ্ড লঙ্ঘন করেছেন।

আদালত আবেদনটি বিবেচনা করেছে এবং সর্বসম্মতিক্রমে মামলাটি বিবেচনার জন্য গ্রহণ করেছে।

এই রায়ের ফলে উপ-প্রধানমন্ত্রী সুরিয়া জুয়াংরুংরুয়াংকিত তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সাময়িকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। পেতংতার্ন অভিযোগের জবাব দেওয়ার জন্য ১৫ দিন সময় পাবেন। তবে সম্প্রতি মন্ত্রিসভায় রদবদল হওয়ায় তিনি নতুন সংস্কৃতি মন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রিসভায় বহাল থাকবেন। পর্যটন মন্ত্রী এবং ফিউ থাই পার্টির মহাসচিব সোরাওয়ং থিয়েনথং গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সরকারি কার্যক্রম থেমে থাকবে না, কোনো সমস্যা নেই। সুরিয়া তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হবেন।’

কম্বোডিয়ার বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদের সঙ্গে ওই ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার ঘটনাটি থাইল্যান্ডের অভ্যন্তরে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়। এর ফলে পেতংতার্নের জোট সরকার সংসদে সামান্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে টিকে থাকার লড়াইয়ে নামে। একটি গুরুত্বপূর্ণ শরিক দল ইতোমধ্যে জোট ত্যাগ করেছে এবং শিগগিরই সংসদে অনাস্থা ভোটের ডাক দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন প্রতিবাদী গোষ্ঠী প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে সোচ্চার হয়েছে।

গত ১৫ জুন কম্বোডিয়ার সঙ্গে ক্রমবর্ধমান সীমান্ত উত্তেজনা প্রশমনের উদ্দেশ্যে করা এক ফোনালাপে ৩৮ বছর বয়সী পেতংতার্ন, হুন সেনের সামনে নতজানু হয়েছিলেন এবং থাই সেনাবাহিনীর একজন কমান্ডারের সমালোচনা করেছিলেন। যে দেশে সেনাবাহিনীর ব্যাপক প্রভাব রয়েছে, সেখানে এটি একটি অমার্জনীয় সীমা লঙ্ঘন হিসেবে দেখা হচ্ছে। যদিও পেতংতার্ন পরে ক্ষমা চেয়ে বলেছেন যে তার মন্তব্যগুলো আলোচনার একটি কৌশল ছিল মাত্র।

পারিবারিক সংকট

ক্ষমতায় আসার মাত্র ১০ মাসের মাথায় পেতংতার্নের এই সংকট মূলত ফিউ থাই দলের পতনশীল শক্তিকেই নির্দেশ করে। এই দলটি ধনকুবের সিনাওয়াত্রা পরিবারের নেতৃত্বে ২০০১ সাল থেকে থাইল্যান্ডের নির্বাচনে আধিপত্য বিস্তার করে আসছে এবং একাধিকবার সামরিক অভ্যুত্থান ও আদালতের রায়ে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে।

রাজনৈতিকভাবে অনভিজ্ঞ পেতংতার্নের জন্য এটি একটি বড় ধাক্কা, যিনি তার পূর্বসূরি স্রেথা থাভিসিনকে সাংবিধানিক আদালত কর্তৃক বরখাস্ত করার পর দেশের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলেন।

পেতংতার্নের সরকার দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে সংগ্রাম করছে। তার জনপ্রিয়তাও ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। সপ্তাহান্তে প্রকাশিত একটি জনমত জরিপে দেখা গেছে, মার্চ মাসে তার জনপ্রিয়তার হার ৩০.৯ শতাংশ থাকলেও জুনে তা কমে ৯.২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

এই সংকটে পেতংতার্ন একা নন। তার প্রভাবশালী বাবা এবং সরকারের মূল চালিকাশক্তি থাকসিন সিনাওয়াত্রাও এই মাসে দুটি ভিন্ন আদালতে আইনি জটিলতা নিয়ে লড়ছেন। থাকসিনের আইনজীবী জানিয়েছেন, রাজতন্ত্রের অবমাননার অভিযোগে মঙ্গলবার ব্যাংককের ফৌজদারি আদালতে প্রথম শুনানিতে তিনি হাজিরা দেন। এই অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে তার ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। যদিও থাকসিন এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বারবার রাজপরিবারের প্রতি তার আনুগত্যের কথা জানিয়েছেন।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.