ভয়াবহ ধসে টাইগারদের বড় হার

লক্ষ্যটা বড় ছিল না। আড়াই শ’র কম। রান তাড়ায় কক্ষপথেই ছিল বাংলাদেশ। এরপরই আচনক ধস নেমে এলো ব্যাটিং অর্ডারে। সহজ জয়ের পথে থাকা টাইগাররা হেরে বসল বড় ব্যবধানে। আজ বুধবার কলম্বোতে ওয়ানডে সিরিজে প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে ৭৭ রানে হেরে গেছে মেহেদি হাসান মিরাজের দল।

বাংলাদেশের ব্যাটারদের সাজঘরে আসা-যাওয়ার ফাঁকে শ্রীলঙ্কার উল্লাস। ছবি: এক্স

টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের চার বল বাকি থাকতে ২৪৪ রানে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা। জবাবে দারুণ শুরুর পর ১৬৭ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। অথচ এক উইকেটে ১০০ রান তুলে ফেলেছিল টাইগাররা। এরপরই ধস নামে ব্যাটিং অর্ডারে। পাঁচ রানের ব্যবধানে আট উইকেট হারিয়ে ফেলে সফরকারীরা (১০৫/৮)।

নবম ও দশম উইকেট জুটি অবশ্য শ্রীলঙ্কার জয়টাকে একটু বিলম্বিত করেছে মাত্র। মিডল অর্ডার ব্যাটার জাকের আলি অনিক এক প্রান্ত আগলে রেখে শেষ দিকে হারের ব্যবধান কমাতে লড়াইয়ে চালিয়ে গেছেন। কিন্তু তাও যথেষ্ট ছিল না। ৬৪ বলে ৫১ রানে আউট হন জাকের। তার ইনিংসে ছিল চারটি করে চার-ছক্কার মার।

ওপেনার তানজিদ তামিম ফেরেন ৬১ বলে ৬২ রান করে। তার সঙ্গী পারভেজ হোসেন ইমন করেন ১৬ বলে ১৩। ইমনের আউটেই ভাঙে ২৯ রানের উদ্বোধনী জুটি। পরে নাজমুল হোসেন শান্ত ও তানজিদ গড়েন ৭১ রানের জুটি। জুটি ভাঙে নাজমুলের বিদায়ে। ২৬ বলে ২৩ রান করেন তিনি। এই জুটি ভাঙতেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন।

লঙ্কানদের বোলিং তোপে টাইগারদের সাত ব্যাটার যেতে পারেননি দুই অংকে। চার ব্যাটার খুলতে পারেননি রানের খাতা। বাংলাদেশকে ধসিয়ে দিয়েছেন দুই স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ও কামিন্দু মেন্ডিস। ১০ রানে চার উইকেট নেন হাসারাঙ্গা। ১৯ রানে তিনটি শিকার কামিন্দুর। এ ছাড়া একটি করে উইকেট পান আসিথা ফার্নান্দো ও মহেশ থিকসানা।

এর আগে আসালাঙ্কার শতকের ওপর দাঁড়িয়ে লড়াইয়ের পুঁজি তোলে শ্রীলঙ্কা। ১২৩ বলে ১০৬ রান করেন লঙ্কান অধিনায়ক ও মিডল অর্ডার ব্যাটার। দ্বিতীয় দলীয় সর্বোচ্চ ৪৫ রানে আউট হন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার কুশল মেন্ডিস। এ ছাড়া জানিথ লিয়ানাগে ২৯, মিলান রত্নায়েকে ২২ ও হাসারাঙ্গা ২২ রান করেন।

বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল তাসকিন আহমেদ; ৪৭ রানে নেন চার উইকেট। আরেক পেসার তানজিম হাসান সাকিব ৪৬ রানে পান তিন উইকেট। একটি করে শিকার তানভির ইসলাম ও নাজমুলের। অভিষেক ওয়ানডে খেলতে নামা তানভিরের এটা প্রথম উইকেট। আর ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটা নাজমুলের দ্বিতীয় শিকার।

ওয়ানডে সংস্করণে এ নিয়ে টানা সাত ম্যাচ হারল বাংলাদেশ। তন্মধ্যে শেষ ১২টি ম্যাচেই নয়টি হার। আগামী শনিবার একই ভেন্যুতে লঙ্কানদের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নামবে টাইগাররা। ম্যাচটা মিরাজ অ্যান্ড কোংয়ের জন্য সিরিজ বাঁচানেরা উপলক্ষ। বিপরীতে এই ম্যাচেই সিরিজ নিশ্চিত করতে চাইবে শ্রীলঙ্কা।

এই ম্যাচের মধ্য দিয়ে ওয়ানডে সংস্করণে নতুন যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ ক্রিকেট। শুরু হলো মিরাজ যুগ। ম্যাচটা আরও একদিক থেকে বিশেষ গুরুত্ব বহন করবে। কেননা ২০০৭ সালে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের পর এই প্রথম কোনো ওয়ানডে ম্যাচে একাদশে থাকলেন না পঞ্চপাণ্ডবের (সাকিব, মাশরাফি, মুশফিক, রিয়াদ ও তামিম) কেউ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা: ২৪৪/১০ (৪৯.২ ওভার)।
বাংলাদেশ: ১৫৭/১০ (৩৫.৫)।
ফল: শ্রীলঙ্কা ৭৭ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: চারিথ আসালাঙ্কা (শ্রীলঙ্কা)।
সিরিজ: তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে শ্রীলঙ্কা।