আপনি পড়ছেন

গাজায় রক্তক্ষয়ী সংঘাত থামাতে ৬০ দিনের একটি যুদ্ধবিরতির নতুন প্রস্তাবনা সামনে এসেছে। ইসরায়েলি গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই প্রস্তাবনার আওতায় ১০ জন জীবন্ত ইসরায়েলি জিম্মি এবং নিহত ১৮ জনের মরদেহ মুক্তি দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের প্রভাবশালী দৈনিক ইয়েদিওত আহরোনোত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে।

gaza situation 7ছবি - সংগৃহীত

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি চলাকালে মোট পাঁচটি ধাপে এই জিম্মি মুক্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। চুক্তিটি গৃহীত হলে, ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস জিম্মি হস্তান্তরের সময় কোনো ধরনের প্রকাশ্য অনুষ্ঠান আয়োজন করবে না।

এই প্রস্তাবনায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে একটি জোরালো নিশ্চয়তার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, যদি ৬০ দিনের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধে কোনো চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব না হয়, কিন্তু আলোচনা আন্তরিকভাবে চলমান থাকে, তবে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো হবে। আলোচনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানিয়েছে, হামাস এই শর্তটিকে ইতিবাচকভাবে দেখছে। তারা এটিকে ইসরায়েলের একতরফাভাবে আক্রমণ পুনরায় শুরু করার বিরুদ্ধে একটি রক্ষাকবচ হিসেবে বিবেচনা করছে।

পত্রিকাটি আরও জানায়, প্রস্তাবনায় গাজা থেকে পর্যায়ক্রমে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের একটি ধারাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই ধারাটি ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিতে পারে। কারণ, ইসরায়েল ক্রমাগত হামাসের নিরস্ত্রীকরণ, এর নেতৃত্বের নির্বাসন এবং গাজার ভবিষ্যৎ প্রশাসনে তাদের অন্তর্ভুক্ত না করার দাবিতে অটল রয়েছে।

হামাস প্রস্তাবটি গ্রহণ করলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই কাতার বা মিশরে পরোক্ষ আলোচনা শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তির নিশ্চয়তাদাতা হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেছেন এবং চুক্তি চূড়ান্ত হলে তিনি ব্যক্তিগতভাবে তা ঘোষণা করতে পারেন। চুক্তি অনুমোদিত হলে, বাকি খুঁটিনাটি চূড়ান্ত করতে একটি ইসরায়েলি প্রতিনিধিদল দ্রুত কাতারের রাজধানী দোহায় নিবিড় আলোচনায় অংশ নেবে।

সহায়তা বিতরণে মতবিরোধ

ইসরায়েলের চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, হামাস শুক্রবারের মধ্যে এই প্রস্তাবনার বিষয়ে তাদের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাবে। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, আগামী সপ্তাহে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওয়াশিংটন সফরের সময় মার্কিন প্রশাসন একটি দৃশ্যমান অগ্রগতি বা অন্তত একটি যুগান্তকারী ঘোষণা প্রত্যাশা করছে।

আলোচনায় ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির বিষয়টিও থাকবে। হামাস এবার শীর্ষস্থানীয় কিছু বন্দির মুক্তি দাবি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যাদের মধ্যে কয়েকজনের মুক্তির দাবি ইসরায়েল এর আগেও প্রত্যাখ্যান করেছিল।

মানবিক সহায়তা বিতরণের পদ্ধতি নিয়েও একটি পৃথক বিরোধ বিদ্যমান। ইসরায়েল একটি মার্কিন প্রতিষ্ঠানের পরিচালিত বর্তমান বিতরণ ব্যবস্থা বজায় রাখতে চায়। অন্যদিকে, হামাস জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত পুরোনো ব্যবস্থায় ফিরে যেতে আগ্রহী, যেটির মাধ্যমে দৈনিক ৪০০ থেকে ৬০০টি সহায়তার ট্রাক প্রবেশ করতে পারত। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুসারে, গত ২৭ মে থেকে ইসরায়েলের তৈরি সহায়তা ব্যবস্থা কার্যকর হওয়ার পর থেকে কমপক্ষে ৬৪০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং প্রায় সাড়ে চার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।

বুধবার হামাস নিশ্চিত করেছে যে, তারা মধ্যস্থতাকারীদের দেওয়া একটি প্রস্তাবনা পর্যালোচনা করছে, যেখানে যুদ্ধবিরতি, গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং ফিলিস্তিনিদের জন্য মানবিক ত্রাণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ফিলিস্তিনি এই গোষ্ঠীটি বারবার জানিয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের সমাপ্তি এবং গাজা থেকে সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহারের বিনিময়ে তারা সকল ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিতে প্রস্তুত।

তবে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একটি সার্বিক চুক্তির বিরোধিতা করে আসছেন। তিনি বরং সীমিত পরিসরের ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দিচ্ছেন, যা যুদ্ধকে চলমান রাখার সুযোগ করে দেবে। এই অবস্থানকে ব্যাপকভাবে তার রাজনৈতিক অস্তিত্ব রক্ষার একটি প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যুদ্ধবিরতির আহ্বান সত্ত্বেও ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় একটি গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে, যেখানে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ৫৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। গত নভেম্বরে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়া, এই উপত্যকায় যুদ্ধের জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও গণহত্যার মামলার মুখোমুখি।

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.