নতুন জাতীয় প্রতীক উন্মোচন করল সিরিয়া

গৃহযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে নতুন পরিচয় গড়ার লক্ষ্যে জাতীয় প্রতীক পরিবর্তন করেছে সিরিয়া। বৃহস্পতিবার দামেস্কে এক অনুষ্ঠানে সোনালি ঈগল সংবলিত নতুন এই প্রতীক উন্মোচন করা হয়। এতে দেশটির ইতিহাস, ভূগোল এবং যুদ্ধ-পরবর্তী আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটানো হয়েছে। সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা সানা-র বরাত দিয়ে আরব নিউজ এ খবর জানিয়েছে।

সিরিয়ার নতুন জাতীয় প্রতীক

নতুন নকশায় ঐতিহাসিক ঈগল প্রতীকটি রাখা হলেও, আগের ঢাল ও যুদ্ধের প্রতীক বাদ দেওয়া হয়েছে। ঈগলের মাথার উপরে তিনটি তারা যুক্ত করা হয়েছে, যা রাষ্ট্রের ঊর্ধ্বে জনগণের প্রতীকী অবস্থানকে তুলে ধরে। এই পরিবর্তনকে দেশটির পরিচয়ের বড় ধরনের রূপান্তরের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দেখা হচ্ছে। নতুন প্রতীকটি এমন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যকে প্রতিফলিত করে, যেখানে সেবা, ঐক্য ও জনগণের সার্বভৌমত্বই হবে মূল ভিত্তি।

প্রতীকটির নকশায় বিশেষ কিছু তাৎপর্য রয়েছে। ঈগলের মাথার ওপর থাকা তিনটি তারা রাষ্ট্রের ঊর্ধ্বে জনগণের অবস্থান নির্দেশ করে। এর সাতটি পালকযুক্ত দুটি ডানা দেশটির ১৪টি প্রদেশের প্রতিনিধিত্ব করে। এ ছাড়া, লেজের পাঁচটি পালক সিরিয়ার পাঁচটি প্রধান ভৌগোলিক অঞ্চলের (উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম ও মধ্য) পরিচায়ক।

সিরিয়ার প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই প্রতীক একটি নতুন রাজনৈতিক চুক্তির ঘোষণা। এর মাধ্যমে জনগণের অংশগ্রহণ, ঐক্য এবং নাগরিকদের সঙ্গে রাষ্ট্রের পারস্পরিক দায়িত্ববোধের ভিত্তিতে সম্পর্ক স্থাপনের অঙ্গীকার করা হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট আহমাদ আল-শারার প্রশাসন এই পরিবর্তনকে ‘জনগণের কাছ থেকে উৎসারিত ও তাদের সেবায় নিয়োজিত সরকার’-এর প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করেছে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসআদ আল-শাইবানি বলেন, ‘এটি শুধু প্রতীক পরিবর্তন নয়, বরং রাষ্ট্র পরিচালনায় একটি মৌলিক রূপান্তরের সূচনা। আমরা এখন এমন একটি রাষ্ট্র গড়তে চাই, যা জনগণকে নিয়ন্ত্রণ না করে তাদের রক্ষা ও ক্ষমতায়িত করে।’

জানা গেছে, চিত্রশিল্পী খালেদ আল-আসালির নেতৃত্বে সিরিয়ার স্থানীয় শিল্পীরা নতুন এই প্রতীকটি তৈরি করেছেন। সরকারি বিবৃতিতে এটিকে শুধু একটি প্রতীক নয়, বরং সিরিয়ার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার প্রতিচ্ছবি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।