গোপন তথ্য ফাঁস: ইসরায়েলের পাঁচ সামরিক ঘাঁটিতে আঘাত হেনেছিল ইরান
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
কঠোর সামরিক বিধিনিষেধের কারণে ইসরায়েল তথ্য গোপন রাখলেও মার্কিন গবেষকদের স্যাটেলাইট রাডার চিত্রে সাম্প্রতিক যুদ্ধের এক ভিন্ন চিত্র ফুটে উঠেছে। ১২ দিনব্যাপী এই সংঘাতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের অন্তত পাঁচটি সামরিক ঘাঁটিতে সরাসরি আঘাত হেনেছে বলে নতুন তথ্যে জানা গেছে। এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানঘাঁটি, একটি গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ কেন্দ্র এবং একটি সরবরাহ ঘাঁটিও রয়েছে। খবর: দ্য টেলিগ্রাফ।
ছবি - সংগৃহীত
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অরেগন স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকরা স্যাটেলাইট রাডার উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এই তথ্য প্রকাশ করেছেন, যা ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দাবির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই হামলাগুলোর খবর ইসরায়েল আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি এবং কঠোর সামরিক আইনের কারণে দেশটির গণমাধ্যমেও এ নিয়ে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি।
শুক্রবার এ বিষয়ে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ বা ঘাঁটির ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। আইডিএফ-এর একজন মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা শুধু এটুকু বলতে পারি যে, অভিযান চলাকালে আমাদের সব প্রাসঙ্গিক ইউনিট তাদের কার্যক্রম সচল রেখেছিল।’
এই পাঁচটি সামরিক স্থাপনায় হামলা ছাড়াও আরও ৩৬টি ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে আবাসিক ও শিল্প অবকাঠামোতে আঘাত হেনেছিল। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সত্ত্বেও ইসরায়েলের অত্যাধুনিক সতর্কীকরণ ব্যবস্থা এবং জনগণের শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে আশ্রয়কেন্দ্র ব্যবহারের কারণে মৃতের সংখ্যা মাত্র ২৮ জনে সীমাবদ্ধ ছিল। তবে এই সংঘাতে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়েছে।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যুদ্ধের প্রথম আট দিনে ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদকারী ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের হার ক্রমাগত বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা এর কারণ হিসেবে ইসরায়েলের সীমিত সংখ্যক প্রতিরোধক ক্ষেপণাস্ত্রের হিসাবি ব্যবহার এবং ইরানের উন্নত রণকৌশল ও অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহারকে দায়ী করছেন।
ইসরায়েলের ‘আয়রন ডোম’ স্বল্প পাল্লার রকেট প্রতিরোধে সর্বাধিক পরিচিত হলেও, দেশটির স্তরভিত্তিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও চালকবিহীন বিমান বা ড্রোনের জন্য ‘ডেভিড’স স্লিং’ এবং দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য ‘অ্যারো’ ব্যবস্থা রয়েছে। এই যুদ্ধে ইসরায়েলি ব্যবস্থাকে সহায়তা করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুটি ভূমি-ভিত্তিক থাড ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং লোহিত সাগরে মার্কিন রণতরী থেকে প্রতিরোধক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়।
ইসরায়েলের অভ্যন্তরেও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলার বিষয়ে সন্দেহ বাড়ছিল। দেশটির জনপ্রিয় সাংবাদিক রাভিভ ড্রাকার সম্প্রতি বলেছেন, ‘আইডিএফ-এর ঘাঁটি এবং কৌশলগত স্থাপনাগুলোতে ইরানের অনেক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে, যা নিয়ে আমরা আজও প্রতিবেদন করতে পারিনি। সাধারণ মানুষ ধারণাই করতে পারছে না ইরানিরা কতটা নিখুঁত ছিল এবং তারা বহু জায়গায় কী পরিমাণ ক্ষতি করেছে।’
অন্যদিকে, ইরান এই যুদ্ধকে নিজেদের বিজয় হিসেবে প্রচার করছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ভেদ করার দৃশ্য দেখিয়ে এবং আয়রন ডোমকে ব্যঙ্গ করে কার্টুন তৈরি করে অভ্যন্তরীণ জনমত পক্ষে আনার চেষ্টা চলছে। ইরানি কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, তারা ক্ষেপণাস্ত্রের সঙ্গে ধীরগতির ড্রোন ব্যবহার করে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে বিভ্রান্ত করার কৌশল নিয়েছিলেন।
ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) উপ-প্রধান কমান্ডার মেজর জেনারেল আলি ফাজলি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দম্ভের সঙ্গে দাবি করেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত আমাদের মোট ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতার মাত্র ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ ব্যবহার করেছি।’
ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তাদের ধারণা, যুদ্ধের শুরুতে ইরানের প্রায় ২,০০০ থেকে ২,৫০০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছিল এবং তারা এর প্রায় অর্ধেক উৎক্ষেপক ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে। তবে তারা সতর্ক করে বলেছে যে, ইরান গণ-উৎপাদন কৌশলের দিকে এগোচ্ছে, যা আগামী কয়েক বছরে তাদের ক্ষেপণাস্ত্রের ভান্ডার ৮,০০০ থেকে ২০,০০০-এ উন্নীত করতে পারে।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.