সিরিয়ায় ব্যাপক অস্ত্রবিরতি ঘোষণা, লঙ্ঘন করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি

দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ সুওয়াইদায় কয়েক দিনের তীব্র অস্থিরতার পর শনিবার সিরিয়ার রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে দেশজুড়ে ব্যাপক ও তাৎক্ষণিক অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত লঙ্ঘিত হলে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে দেশটির নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

এক বিবৃতিতে রাষ্ট্রপতির কার্যালয় সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে ‘এই সিদ্ধান্ত পুরোপুরি মেনে চলার, সব এলাকায় তাৎক্ষণিক সব ধরনের সংঘাতমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করার, বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার এবং মানবিক সহায়তা নির্বিঘ্নে পৌঁছানোর নিশ্চয়তা দেওয়ার’ আহ্বান জানিয়েছে।

বিবৃতিতে আরও সতর্ক করে বলা হয়, ‘এই সিদ্ধান্তের যেকোনো লঙ্ঘন জাতীয় সার্বভৌমত্বের সুস্পষ্ট অবমাননা হিসেবে বিবেচিত হবে এবং সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে সবাইকে ‘সিরিয়ার রাষ্ট্র, তার প্রতিষ্ঠান ও বাহিনীকে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে এই অস্ত্রবিরতি বাস্তবায়নের সুযোগ দেওয়ার’ আহ্বান জানানো হয়েছে, যা ‘স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে এবং রক্তপাতের অবসান ঘটাবে’।

গত ১৩ জুলাই সুওয়াইদায় বেদুইন আরব উপজাতি এবং সশস্ত্র দ্রুজ গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে সহিংসতার মাত্রা বাড়ে এবং ইসরায়েল বিমান হামলা চালায়। দামেস্কে সিরীয় সামরিক স্থাপনা ও অবকাঠামোতেও হামলা চালানো হয়। ইসরায়েল এই হামলার কারণ হিসেবে ‘দ্রুজ সম্প্রদায়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করার’ অজুহাত দেখিয়েছে।

এদিকে, আঙ্কারায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত টম ব্যারাকও নিশ্চিত করেছেন যে ইসরায়েল ও সিরিয়া একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। সিরিয়ার জন্য মার্কিন বিশেষ দূত হিসেবেও দায়িত্ব পালনকারী ব্যারাক শুক্রবার শেষ দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, ‘ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং সিরিয়ার রাষ্ট্রপতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে একটি অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয়েছেন, যা তুরস্ক, জর্ডান ও তার প্রতিবেশীরা সাদরে গ্রহণ করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দ্রুজ, বেদুইন এবং সুন্নিদের প্রতি অস্ত্র ফেলে দেওয়ার এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের সঙ্গে মিলে একটি নতুন ও ঐক্যবদ্ধ সিরীয় পরিচয় গড়ে তোলার আহ্বান জানাই। আমরা সব সিরীয়কে একে অপরকে সম্মান করতে এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তি ও সমৃদ্ধিতে বসবাস করার জন্য অনুরোধ করছি।’

উল্লেখ্য, সিরিয়ার প্রায় ২৫ বছরের শাসক আসাদ গত ডিসেম্বরে রাশিয়ায় পালিয়ে যান। এর মধ্য দিয়ে ১৯৬৩ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা বাথ পার্টির শাসনের অবসান ঘটে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে রাষ্ট্রপতি আহমাদ আল-শারার নেতৃত্বে সিরিয়ায় একটি নতুন অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠিত হয়।