গাজায় ‘ধীরে ধীরে মৃত্যু’র কথা বলায় বহিষ্কৃত জাতিসংঘের কর্মকর্তা

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করায় জাতিসংঘের একজন শীর্ষ কর্মকর্তার ভিসা বাতিল করেছে ইসরায়েল। রোববার (২০ জুলাই) দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সা’র বিষয়টি নিশ্চিত করেন। জোনাথন হুইটল নামের ওই কর্মকর্তা জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয়কারী সংস্থার (ওসিএইচএ) জেরুজালেম কার্যালয়ের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে গিডিয়ন সা’র লেখেন, ‘জেরুজালেমে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয়কারী সংস্থার (ওসিএইচএ) প্রধান জোনাথন হুইটলের আবাসিক অনুমতিপত্র বাতিল করা হয়েছে। তিনি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট ও শত্রুতাপূর্ণ আচরণ করেছেন, বাস্তবতাকে বিকৃত করেছেন এবং জাতিসংঘের নিরপেক্ষতার নীতি ভেঙেছেন। তাই তার অনুমতিপত্র আর নবায়ন করা হবে না।’

দক্ষিণ আফ্রিকার নাগরিক হুইটল জেরুজালেমে বসবাস করতেন এবং নিয়মিত গাজা উপত্যকা পরিদর্শন করতেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে গাজার মানবিক বিপর্যয় নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন। গত এপ্রিলে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, ‘গাজার বাসিন্দারা ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।’

গত বছরের অক্টোবর থেকে ইসরায়েল-হামাস সংঘাত শুরুর পর জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার কর্মীদের ভিসা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এসব সংস্থার মধ্যে ওসিএইচএ, জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন (ওএইচসিএইচআর) এবং ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডাব্লিউএ অন্যতম। হুইটলের ভিসা বাতিলের বিষয়ে জাতিসংঘ এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে হামাসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইউএনআরডাব্লিউএ’র ১২ জন কর্মীকে বহিষ্কার করেছিল ইসরায়েল। ওই ঘটনার জেরে কয়েকটি পশ্চিমা দেশ সংস্থাটির তহবিল স্থগিত করে।

হুইটলকে বহিষ্কারের এই ঘটনা গাজায় চলমান মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ, ওসিএইচএ উপত্যকায় খাদ্য, পানি ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো সমন্বয় করে থাকে। ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দেবে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে তাদের সম্পর্কে আরও টানাপোড়েন সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।