মাঠের আগে টেবিলে ঝড়, বিপিএলের চেহারা বদলে দিতে চায় বিসিবি

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) হারানো গৌরব ফেরাতে এবং টুর্নামেন্টকে একটি পেশাদার রূপ দিতে এবার কোমর বেঁধে নেমেছে গভর্নিং কাউন্সিল। বিগত ১১ আসরের নানা ত্রুটি থেকে শিক্ষা নিয়ে লিগটিকে ঢেলে সাজানোর যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে একটি আন্তর্জাতিক মানের ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান নিয়োগের প্রক্রিয়া। এই দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ১৩ বছরের সফল আয়োজক ইন্টারন্যাশনাল ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ (আইএমজি)।

বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মাহাবুবুল আনাম লিগের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে বদ্ধপরিকর। সেই লক্ষ্যে গত এক মাসে ক্রিকেটার ও সাংবাদিকদের মতো গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের মতামত নেওয়া হয়েছে। পুরো আয়োজনের আন্তর্জাতিকীকরণ এখন মূল লক্ষ্য। জানা গেছে, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের জন্য দরপত্র জমা দেওয়া পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চারটিই আন্তর্জাতিক। শনিবার দরপত্র জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শেষে গতকাল প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেছে। গভর্নিং কাউন্সিলের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা বিডে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে তালিকাভুক্ত করলাম। তারা কীভাবে বিপিএল পরিচালনা করবে এবং কত টাকা দেবে, সেগুলো দেখার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ আগামী ৫ আগস্টের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই ব্যাপক পরিবর্তনের মূল উদ্দেশ্য ২০২৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য জাতীয় দলকে প্রস্তুত করা। গভর্নিং কাউন্সিল চাইছে, ক্রিকেটাররা যেন বিপিএলের ছন্দ নিয়েই বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করতে পারেন। এ জন্য টুর্নামেন্টের ১২তম আসরটি ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে আয়োজনের একটি সম্ভাব্য স্লট নির্ধারণ করা হয়েছে।

তবে এই সময়সূচি চূড়ান্ত হবে জাতীয় নির্বাচনের তারিখের ওপর ভিত্তি করে। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব নাজমুল আবেদীন ফাহিম জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারির শুরুতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে টুর্নামেন্টটি ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর কারণ, জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচনী দায়িত্বে ব্যস্ত হয়ে পড়বে, যা টুর্নামেন্টের নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলতে পারে।

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত হওয়ার পরেই ফ্র্যাঞ্চাইজি মনোনয়নের কাজ শুরু হবে। এবারের আসরে ছয়টি দল নিয়ে আয়োজন করার সম্ভাবনা রয়েছে এবং ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে ছয় বছরের জন্য দীর্ঘমেয়াদী মালিকানা দেওয়া হতে পারে। যদি আইএমজির মতো প্রতিষ্ঠান দায়িত্ব পায়, তবে টুর্নামেন্টে বিদেশি বিনিয়োগ, আন্তর্জাতিক মানের স্পন্সর এবং বিশ্বজুড়ে সম্প্রচারের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা, যা বিপিএলকে সত্যিকার অর্থেই একটি আন্তর্জাতিক লিগে পরিণত করবে।