আপনি পড়ছেন

গাজা উপত্যকায় চলমান দুর্ভিক্ষের পটভূমিতে ইসরায়েলে অস্ত্র বিক্রি বন্ধে সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্সের আনা দুটি প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছে মার্কিন সিনেট। বুধবার অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে প্রস্তাব দুটি প্রত্যাখ্যাত হয়।

বার্নি স্যান্ডার্স

প্রথম প্রস্তাবে (এস.জে. রেস. ৪১) হাজার হাজার স্বয়ংক্রিয় আক্রমণকারী রাইফেল বিক্রি নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়েছিল, যা ২৭-৭০ ভোটে খারিজ হয়ে যায়। দ্বিতীয় প্রস্তাবে (এস.জে. রেস. ৩৪) এক হাজার পাউন্ড ওজনের বোমাসহ ৬৭ কোটি ৫৭ লক্ষ ডলারের অস্ত্র প্যাকেজ বাতিলের আহ্বান জানানো হয়েছিল, যা ২৪-৭৩ ভোটের ব্যবধানে প্রত্যাখ্যাত হয়।

তবে এই ভোটাভুটিতে একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় ছিল ডেমোক্র্যাট সিনেটরদের অংশগ্রহণ। সিনেটের অর্ধেকেরও বেশি ডেমোক্র্যাট সদস্য প্রস্তাব দুটির পক্ষে ভোট দিয়েছেন, যা একটি নতুন রেকর্ড।

ভোটের পর এক বিবৃতিতে স্যান্ডার্স বলেন, ‘পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। মার্কিনিরা গাজার শিশুদের অনাহারে মারার জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করতে চায় না।’ তিনি আরও বলেন, ‘ডেমোক্র্যাটরা এই বিষয়ে এগিয়ে আসছে এবং আমি আশা করি অদূর ভবিষ্যতে রিপাবলিকানদেরও সমর্থন পাব।’

এর আগে সিনেট কক্ষে দেওয়া ভাষণে স্যান্ডার্স বলেন, ইসরায়েল গত ২১ মাস ধরে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে একটি পুরোদস্তুর ‘বেআইনি, অনৈতিক এবং ভয়াবহ সর্বাত্মক নিধনযজ্ঞ’ চালিয়েছে।

তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন যে, ২ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত ইসরায়েল গাজায় মানবিক সহায়তার কোনো চালান প্রবেশ করতে দেয়নি। তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক মাসগুলোতে নেতানিয়াহু সরকারের গাজা নির্মূল অভিযান সেখানকার অবর্ণনীয় ও ভয়াবহ পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করেছে।’

স্যান্ডার্স আরও অভিযোগ করেন যে, ইসরায়েলি সরকার গাজার ‘জাতিগত নির্মূলীকরণের’ নকশা বাস্তবায়নের জন্য গণ-অনাহারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। তিনি বলেন, ‘প্রকাশ্যে প্রতিদিন এই ধরনের যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হওয়া সত্ত্বেও, এই যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের জন্য ২২০০ কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ সরবরাহ করেছে।’

‘মার্কিনিরা এর অবসান চায়’

স্যান্ডার্স বলেন, মার্কিন করদাতারা নেতানিয়াহুর ‘বর্ণবাদী ও চরমপন্থী’ সরকারকে সমর্থন দেওয়ার জন্য কোটি কোটি ডলার ব্যয় করেছে। তার কথায়, ‘অনেক হয়েছে, আর নয়।’

তিনি বলেন, ‘মার্কিনিরা এর অবসান চায়। তারা চলমান দুর্ভিক্ষ এবং প্রতিদিনের বেসামরিক গণহত্যার অংশীদার হতে চায় না। আজ রাতে কংগ্রেসে আমাদের পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা আছে। আর আলোচনা বা সুন্দর ভাষণ নয়। আজ রাতে আমাদের কাজ করার ক্ষমতা আছে—নেতানিয়াহু এবং তার চরমপন্থী সরকারকে এই হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে বাধ্য করার ক্ষমতা।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘কংগ্রেসের হাতে থাকা ক্ষমতার—অর্থাৎ শত শত কোটি ডলারের অস্ত্র ও সামরিক সহায়তার—সদ্ব্যবহার করার সময় অনেক আগেই পেরিয়ে গেছে, যা দিয়ে ইসরায়েলকে এই নৃশংসতা বন্ধ করতে বাধ্য করা যেত।’

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে যুদ্ধবিরতির আহ্বান উপেক্ষা করে ইসরায়েলি বাহিনী ২০২৩ সালের শেষভাগ থেকে গাজায় এক নৃশংস অভিযান পরিচালনা করে আসছে। এই অভিযানে ৬০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। নিরবচ্ছিন্ন ও বর্বরোচিত বোমাবর্ষণে পুরো উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং অনাহারে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

গত নভেম্বরে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়া, উপত্যকায় চালানো যুদ্ধের জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) গণহত্যার মামলার সম্মুখীন।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.