গাজা ইস্যুতে ট্রাম্প: মানুষকে বাঁচাতে চাই, তাদের মুখে খাবার তুলে দিতে চাই

ইসরায়েলের চলমান কঠোর বিধিনিষেধের কারণে যখন গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে, তখন অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পাঠানোর একটি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করার কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

এক্সিয়স সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সংক্ষিপ্ত ফোনালাপে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা মানুষকে সাহায্য করতে চাই। আমরা তাদের বেঁচে থাকতে সহায়তা করতে চাই। আমরা মানুষের মুখে খাবার তুলে দিতে চাই। এই উদ্যোগ আরও অনেক আগেই নেওয়া উচিত ছিল।’

এমন সময়ে তার এই মন্তব্য এলো, যখন হোয়াইট হাউসের দূত স্টিভ উইটকফ এবং ইসরায়েলে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মাইক হাকাবি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত বিভিন্ন সহায়তা কেন্দ্র পরিদর্শন করছিলেন।

ট্রাম্প জানিয়েছেন, এই সফর সম্পর্কে তাকে এখনো বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। তবে তিনি উইটকফের প্রশংসা করে বলেন, ‘তিনি দারুণ কাজ করছেন।’

এর আগেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট স্বীকার করেছিলেন যে গাজায় ‘প্রকৃত অর্থেই দুর্ভিক্ষাবস্থা’ বিরাজ করছে। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘সেখানে যা ঘটছে তা ভয়াবহ। হ্যাঁ, এটা একটা ভয়াবহ ব্যাপার। মানুষ প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত।’

এই সফর ও ঘোষণা এমন এক সময়ে এলো, যখন গাজায় মার্কিন-ইসরায়েলি সমন্বয় নিয়ে তীব্র সমালোচনা চলছে। ফিলিস্তিনিদের অভিযোগ, এই গোষ্ঠীর বিতরণ ব্যবস্থাটি মানবিক সহায়তার আড়ালে তাদের বাস্তুচ্যুত করার একটি কৌশল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটিকে অনেক ফিলিস্তিনি সাহায্যপ্রার্থীর জন্য একটি ‘মৃত্যুফাঁদ’ হিসেবেও দেখা হচ্ছে, কারণ গত মে মাস থেকে ত্রাণসামগ্রীর জন্য অপেক্ষা করার সময় ১,৩০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ৮৯টি শিশুসহ অন্তত ১৫৪ জন ফিলিস্তিনি অনাহারজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেছেন।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় এক নৃশংস অভিযান চালিয়ে আসছে, যেখানে ৬০,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। নিরবচ্ছিন্ন এই বোমাবর্ষণে অবরুদ্ধ উপত্যকাটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।