নেতানিয়াহু সরকারের সিদ্ধান্ত উল্টে দিলো আদালত

ইসরায়েলের অ্যাটর্নি জেনারেল গালি বাহারভ-মিয়ারাকে বরখাস্ত করার পক্ষে দেশটির সরকার সর্বসম্মতভাবে ভোট দিলেও সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত করে একটি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ জারি করেছে সর্বোচ্চ আদালত। নজিরবিহীন এই ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের সঙ্গে বিচার বিভাগের সংঘাত নতুন করে প্রকাশ্যে এসেছে, যা দেশটির রাজনীতিতে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।

স্থানীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিচারমন্ত্রী ইয়ারিভ লেভিনের উত্থাপিত একটি প্রস্তাবে সব মন্ত্রী অ্যাটর্নি জেনারেলকে বরখাস্ত করার পক্ষে রায় দেন।

তবে অ্যাটর্নি জেনারেল গালি বাহারভ-মিয়ারা এই ভোট প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানান। সরকারের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি এই পদক্ষেপকে ‘মৌলিকভাবে আইনবিরোধী’ বলে অভিহিত করেছেন। চিঠিতে তিনি অভিযোগ করেন, বিচারমন্ত্রী এমন একজন আইন উপদেষ্টা খুঁজছেন যিনি ‘সরকারের আজ্ঞাবহ থাকবেন এবং তাদের আইন লঙ্ঘনমূলক কর্মকাণ্ডের অনুমোদন দেবেন’।

দৈনিক ইয়েদিওথ আহরোনোথ জানিয়েছে, উদাহরণ হিসেবে তিনি কট্টরপন্থী হারেদি ইহুদিদের বাধ্যতামূলক সামরিক পরিষেবা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার মতো সরকারি পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন।

এদিকে, সরকারের এই পদক্ষেপের পরপরই দেশটির সর্বোচ্চ আদালত একটি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ জারি করে। দেশটির সরকারি গণমাধ্যম কানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আদালত তার আদেশে বলেছে, অ্যাটর্নি জেনারেলকে তার পদ থেকে অপসারণ করার কোনো কর্তৃত্ব সরকারের নেই। ফলে বাহারভ-মিয়ারা তার পদে বহাল থাকছেন।

উল্লেখ্য, গালি বাহারভ-মিয়ারা প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে চলমান দুর্নীতি মামলার একজন কৌঁসুলি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, যা এই ঘটনাকে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে।

২০১৯ সালে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ১০০০, ২০০০ এবং ৪০০০ নম্বরে তিনটি পৃথক দুর্নীতির মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় তার বিরুদ্ধে ঘুষ, জালিয়াতি এবং বিশ্বাসভঙ্গের মতো গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। যদিও নেতানিয়াহু বরাবরই সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন এবং এগুলোকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

২০২০ সালের ২৪ মে জেরুজালেমের জেলা আদালতে নেতানিয়াহুর বিচার শুরু হয়। তিনিই ইসরায়েলের ইতিহাসে প্রথম ক্ষমতাসীন নেতা, যিনি ফৌজদারি মামলায় আসামি হিসেবে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছেন।