গাজা ইস্যুতে পক্ষপাতমূলক সংবাদ: মার্কিন গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনে বিক্ষোভ

গাজায় ইসরায়েলি হামলা নিয়ে পক্ষপাতমূলক সংবাদ পরিবেশনের অভিযোগে শীর্ষস্থানীয় মার্কিন গণমাধ্যমগুলোর প্রধান কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছেন ফিলিস্তিনপন্থী অধিকারকর্মীরা। মঙ্গলবার ওয়াশিংটন ডিসিতে আয়োজিত এই বিক্ষোভে গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যায় মদদ দেওয়ার’ মতো গুরুতর অভিযোগ তোলা হয়। বিক্ষোভকারীদের দাবি, মার্কিন গণমাধ্যমগুলো ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড নিয়ে সঠিক তথ্য উপস্থাপন না করে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে, যা প্রকারান্তরে গণহত্যাকে সমর্থন জোগাচ্ছে।

ওয়াশিংটনের ৪০০ নর্থ ক্যাপিটল স্ট্রিটে অবস্থিত এনবিসি, ফক্স নিউজ, এমএসএনবিসি এবং দ্য হিলের মতো প্রভাবশালী গণমাধ্যমের কার্যালয়ের বাইরে সমবেত হন বিক্ষোভকারীরা। তাদের হাতে থাকা প্রতিবাদী ফলকে ‘গণহত্যায় গণমাধ্যমের মদদ দেওয়া বন্ধ করো’ এবং ‘গণমাধ্যমের মিথ্যাচার, গাজার মৃত্যু’-এর মতো বিভিন্ন স্লোগান লেখা ছিল।

বিক্ষোভের অন্যতম আয়োজক হাজামি বারমাদা বলেন, ‘২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজার ওপর যে নির্মম হামলা চলছে, তাতে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকেই শিশু। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে অনেক গণমাধ্যমই এ বিষয়ে নীরব বা মদদদাতার ভূমিকা পালন করে চলেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই ভবনটি (গণমাধ্যম কার্যালয়) থেকে যে গল্পগুলো বের হয়, বিশ্ব সেগুলোই বিশ্বাস করে। আর এখন, সেই গল্পগুলোই মানুষ মারছে।’

বারমাদা গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের ভাষার সমালোচনা করে বলেন, সংবাদে যখন ‘ইসরায়েল মানুষকে অনাহারে রাখছে’ না বলে ‘মানুষ অনাহারে থাকছে’-এর মতো পরোক্ষ ভাষা ব্যবহার করা হয়, তখন তা ‘গণমৃত্যুকে স্বাভাবিক করে তোলে’ এবং ফিলিস্তিনিদের কণ্ঠকে সচেতনভাবে উপেক্ষা করে।

স্থানীয় কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের হামলায় প্রায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত এবং প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করার ঘটনার জবাবে ইসরায়েল গাজায় যে অভিযান শুরু করে, তাতে এখন পর্যন্ত ৬১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

ইসরায়েলের এই সামরিক অভিযানে পুরো উপত্যকা প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে এবং সৃষ্টি হয়েছে তীব্র খাদ্য সংকট। ইসরায়েল গত ১৮ বছর ধরে গাজার ওপর অবরোধ বজায় রেখেছে এবং গত ২ মার্চ থেকে সব সীমান্ত পারাপার বন্ধ করে দেওয়ায় মানবিক সহায়তার প্রবেশ কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে, যা উপত্যকার ভয়াবহ পরিস্থিতিকে আরও গুরুতর করে তুলেছে।