খরা ও জ্বালানি সংকটে বিপর্যস্ত ইরান, ১২ প্রদেশে সরকারি দপ্তর বন্ধ ঘোষণা
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
তীব্র তাপপ্রবাহ এবং দীর্ঘস্থায়ী অব্যবস্থাপনার কারণে ইরান এক ভয়াবহ পানি ও জ্বালানি সংকটের মুখে পড়েছে। গ্রীষ্মের তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশজুড়ে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইরানের সরকার অন্তত ১২টি প্রদেশে সরকারি দপ্তর বন্ধ ঘোষণা করেছে এবং জ্বালানি সংরক্ষণে দেশব্যাপী সপ্তাহব্যাপী দপ্তর বন্ধ রাখার সতর্কবার্তা দিয়েছে।

ইরান ওপেন ডেটার তথ্যমতে, দেশটির ক্রমবর্ধমান পানি ও জ্বালানি সংকটের পেছনে দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা দায়ী। বছরের পর বছর ধরে উর্মিয়া হ্রদ, হুর-আল-আজিম জলাভূমি এবং হামুনের মতো গুরুত্বপূর্ণ জলাশয়গুলো শুকিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সতর্ক করা হলেও কার্যকর কোনো সমাধান মেলেনি।
রাজধানীতে ভয়াবহ সংকট
পানি সংকট এখন ইরানের রাজধানী তেহরানেও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। তেহরান ও পার্শ্ববর্তী আলবোর্জ প্রদেশ ইতিহাসের সবচেয়ে তীব্র পানি সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে। সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, কারাজ জলাশয়ে পানির প্রবাহ ৫৮ শতাংশ, লারে ৩৪ শতাংশ এবং তালেগানে ৩২ শতাংশ কমেছে। লাতিয়ান ও মামলু জলাধারে সম্মিলিতভাবে প্রবাহ কমেছে ৪৭ শতাংশ।
দেশের জলাধারগুলোতে ধারণক্ষমতার মাত্র ৪৬ শতাংশ পানি রয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ২৬ শতাংশ কম। এই পরিস্থিতিতে জ্বালানি মন্ত্রণালয় নাগরিকদের পানির ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমানোর আহ্বান জানিয়েছে। ইরানের জল শিল্পের মুখপাত্রের মতে, তেহরান, আলবোর্জ এবং কাজভিন প্রদেশ সর্বোচ্চ সংকটে রয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ২০২৮ সালের মধ্যে তেহরানে বাৎসরিক পানির ব্যবহার ৩.৭ বিলিয়ন ঘনমিটার থেকে কমে ২.২ বিলিয়ন ঘনমিটারে নেমে আসতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, এখনই ব্যবহার কমানো না হলে তেহরানকে ২০২২ সালে হামেদান শহরের মতো দীর্ঘস্থায়ী বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হতে পারে। তেহরানের নগর পরিষদের একজন সদস্য রাজধানীর অবকাঠামোগত দুর্বলতার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে শহরের অবকাঠামো তাল মেলাতে পারছে না। এর জন্য অনিয়ন্ত্রিত নগর উন্নয়নই দায়ী।’
ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ
চলতি বছর ইরানের পানি ও জ্বালানি খাতের জন্য অত্যন্ত কঠিন একটি সময়। এই বছরে গড় বৃষ্টিপাত হয়েছে মাত্র ১০১ মিলিমিটার, যা দীর্ঘমেয়াদী গড়ের চেয়ে ৩৭ শতাংশ কম। শুধু তেহরানেই বৃষ্টিপাত কমেছে ৪৬ শতাংশ। জাতীয় জলাধারগুলোতে পানির প্রবাহ গত বছরের তুলনায় ৩.৫ বিলিয়ন ঘনমিটার কমে ৯.৫ বিলিয়ন ঘনমিটারে দাঁড়িয়েছে।
কারাজ এবং লারের মতো গুরুত্বপূর্ণ জলাশয়গুলো তাদের ধারণক্ষমতা প্রায় হারিয়ে ফেলেছে। ১৭৯ মিলিয়ন ঘনমিটার ধারণক্ষমতার কারাজ জলাশয়ে বর্তমানে মাত্র ১১ মিলিয়ন ঘনমিটার পানি অবশিষ্ট আছে, যা মোট ধারণক্ষমতার মাত্র ৭ শতাংশ। অথচ গত বছর একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ২৯ মিলিয়ন ঘনমিটার।
২০০০ সাল থেকে সরকারের গভীর কূপ খননের উৎসাহ দেওয়ার ফলে দেশটিতে প্রায় ৩ লাখ অবৈধ এবং ৫ লাখ বৈধ কূপ খনন করা হয়েছে। জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের মতে, ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের হার বছরে ৪৮ বিলিয়ন ঘনমিটারের বেশি হওয়া উচিত নয়, কিন্তু বর্তমানে তা ৫৪ বিলিয়ন ঘনমিটার ছাড়িয়ে গেছে, যা সংকটকে আরও গভীর করে তুলেছে।
সূত্র: গ্লোবাল ভয়েস
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.