ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান ইসরায়েলি মন্ত্রীর

রামাল্লাভিত্তিক ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে (পিএ) অবিলম্বে ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইসরায়েলের চরমপন্থী জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির। রবিবার (১০ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে পরবর্তী মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করেন।

বেন-গভির তার পোস্টে বলেন, ‘সন্ত্রাসী আবু মাজেনের (মাহমুদ আব্বাস) ‘ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র’ গঠনের পরিকল্পনার জবাবে এই কর্তৃপক্ষকে গুঁড়িয়ে দেওয়াই উচিত।’

গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস আগামী সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ফিলিস্তিনকে একটি পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্রে রূপান্তরের ঘোষণা দিতে পারেন। এই সম্ভাবনাকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলি প্রশাসনে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

বেন-গভিরের এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, এই মন্তব্য ‘গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের চলমান গণহত্যা, জবরদস্তিমূলক উচ্ছেদ ও ভূমি দখল নীতিরই ধারাবাহিকতা’।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এ ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পরিচালিত অপরাধমূলক নীতিরই অংশ। এর মূল উদ্দেশ্য হলো ফিলিস্তিনিদের জাতীয় অধিকার কেড়ে নেওয়া এবং তাদের রাষ্ট্র গঠনের সম্ভাবনাকে ধ্বংস করা।’ মন্ত্রণালয়টি বেন-গভিরের এই আহ্বানকে আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত এবং দ্বিপাক্ষিক চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবেও উল্লেখ করেছে।

সম্প্রতি জাতিসংঘে ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্যপদ ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির একটি প্রস্তাব তোলা হলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল তার বিরোধিতা করে। উল্লেখ্য, ১৯৮৮ সালে নির্বাসিত অবস্থায় ঘোষিত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে বর্তমানে জাতিসংঘের ১৪৮টি সদস্য রাষ্ট্র স্বীকৃতি দিয়েছে।

ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে ১৯৬৭ সালের সীমানা অনুযায়ী একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের বিরোধিতা করে আসছে। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও তার সরকারের দাবি, একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র ইসরায়েলের অস্তিত্বের জন্য মারাত্মক হুমকি।

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় চলমান ইসরায়েলি অভিযানে ৬১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এই হামলায় গাজার প্রায় সমস্ত অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে এবং পুরো এলাকাটি দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে।