জরিপে সমর্থন কমেছে বিএনপি-জামায়াতের, কিছুটা এগিয়েছে এনসিপি

রাজনৈতিক দলগুলোর জনপ্রিয়তা নিয়ে করা এক সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী আগের তুলনায় সমর্থন হারাচ্ছে, বিপরীতে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সামান্য হলেও জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে।

“পাবলিক ওপিনিয়ন, এক্সপেরিয়েন্সেস অ্যান্ড এক্সপেকটেশনস, জুলাই ২০২৫” শিরোনামের এই জরিপ যৌথভাবে পরিচালনা করেছে ভয়েস ফর রিফর্ম ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি)।

সোমবার (১১ আগস্ট) আগারগাঁও জাতীয় আর্কাইভস মিলনায়তনে জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইজিডির ফেলো সৈয়দা সেলিনা আজিজ।

গত অক্টোবরের জরিপে ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ ভোটার বিএনপিকে ভোট দেওয়ার কথা বললেও, জুলাই ২০২৫-এ এই হার কমে দাঁড়ায় ১২ শতাংশে। অন্যদিকে এনসিপির জনপ্রিয়তা ২ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৮ শতাংশে পৌঁছেছে।

জামায়াতে ইসলামী সমর্থন ১১ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে কমে ১০ দশমিক ৪ শতাংশে নেমেছে। অন্যান্য ইসলামপন্থি দলের সমর্থন ২ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে ০ দশমিক ৭ শতাংশে নেমেছে। অন্যান্য দলের সমর্থনও ৫ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে কমে ১ দশমিক ৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। জাতীয় পার্টির সমর্থন ২ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে কমে মাত্র ০ দশমিক ৩ শতাংশে নেমেছে।

আওয়ামী লীগের সমর্থন গত অক্টোবরের ৮ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে জুলাইয়ে কমে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ হয়েছে।

অক্টোবর ২০২৪-এ যেখানে ৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ ভোটার কোনো দল নির্দিষ্ট করেননি, জুলাই ২০২৫-এ তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ দশমিক ৫ শতাংশে। এছাড়া ভোটের পছন্দ জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ, যা গত অক্টোবরের ১২ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে বেশি।

১ থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত দেশের ৬৪টি জেলার ৫ হাজার ৪৮৯ জন নারী-পুরুষের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে এই জরিপ পরিচালনা করা হয়।

জরিপে ৭০ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করছেন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে, আর ১৫ শতাংশ বিপরীত মত দিয়েছেন।

নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে ৫১ শতাংশ বলেছেন, সংস্কারের পর নির্বাচন হওয়া উচিত; ১৭ শতাংশ জরুরি সংস্কারের পর, আর ৩২ শতাংশ চান ডিসেম্বর ২০২৫-এ ভোট হোক। ১২ শতাংশ চান ফেব্রুয়ারি ২০২৬, ১১ শতাংশ চান জুন ২০২৬-এ, আর ২৫ শতাংশ চান ডিসেম্বর ২০২৬ বা তার পরে।

মূল প্রবন্ধে সৈয়দা সেলিনা আজিজ বলেন, বর্তমানে সমস্যাগুলোর প্রকৃতি বহুমাত্রিক, এবং এসব সমস্যায় অর্থনীতির একতরফা প্রভাব কমেছে। আইনশৃঙ্খলা অবনতি, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও অশান্তির কারণে অন্তর্বর্তী সরকারের গ্রহণযোগ্যতা কমেছে।

তিনি আরও বলেন, মানুষ এই অস্থিরতার সমাধান খুঁজছে দুটি উপায়ে—প্রথমত নির্বাচনের মাধ্যমে, দ্বিতীয়ত সংস্কারের মাধ্যমে। যদিও মানুষ নির্বাচনমুখী, তবে বিপুলসংখ্যক ভোটার এখনও অনির্ধারিত। উপযুক্ত প্রার্থী মনোনয়ন ভোটের ফল নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ভয়েস ফর রিফর্মের সহ-সমন্বয়ক একেএম ফাহিম মাশরুর এবং বিআইজিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো মিরাজ এম হাসান ও আসিফ শাহান।