গাজা অভিযান সম্প্রসারণ: ইসরায়েলের তীব্র সমালোচনায় ফ্রান্স

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সোমবার গাজা শহর এবং মাওয়াসি শিবিরে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সম্প্রসারণের ঘোষণার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি এই পদক্ষেপকে ‘নজিরবিহীন ভয়াবহতার এক অনুমেয় বিপর্যয়’ বলে অভিহিত করেছেন।

ফরাসি সংবাদমাধ্যম বিএফএমটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘গাজা শহর ও মাওয়াসি শিবিরে অভিযান সম্প্রসারণ এবং ইসরায়েলের পুনঃদখলের ঘোষণা একটি নজিরবিহীন ভয়াবহ বিপর্যয় এবং স্থায়ী যুদ্ধের দিকে বেপরোয়া ছুটে চলার নামান্তর।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘এই কৌশলের প্রথম শিকার হবে ইসরায়েলি জিম্মি এবং গাজার সাধারণ মানুষ।’

ম্যাক্রোঁ অবিলম্বে ও স্থায়ীভাবে সংঘাত বন্ধের জন্য তাঁর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে এই যুদ্ধের অবসান ঘটাতে হবে।’

আন্তর্জাতিক মহলের যুদ্ধবিরতির আহ্বান উপেক্ষা করে ইসরায়েল ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় এক নৃশংস সামরিক অভিযান চালিয়ে আসছে। এই বর্বরোচিত হামলায় ৬১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের প্রায় অর্ধেকই নারী ও শিশু। লাগাতার সামরিক অভিযানে উপত্যকাটি প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং সেখানে দুর্ভিক্ষাবস্থা তৈরি হয়েছে।

ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান জাতিগত নিধন ও গণহত্যার বিষয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ উপেক্ষা করে ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সামরিক অভিযান সম্প্রসারণ এবং গাজা শহর পুরোপুরি দখল করার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে।

উল্লেখ্য, গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল।

এছাড়া, আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) গত বছর গাজা বিষয়ক এক অন্তর্বর্তীকালীন রায়ে বলেছিল, ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড গণহত্যার সামিল হওয়ার ‘যৌক্তিক আশঙ্কা’ রয়েছে। আদালতটি ইসরায়েলি সরকারকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলতে এবং গাজায় অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনিদের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছানো নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তীকালীন পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিল।