নির্বাচন সামনে রেখে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই সব জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের সব জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, সেপ্টেম্বরের মধ্যেই এসব নিয়োগ চূড়ান্ত করা হবে।

জাতীয় নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারি (২০২৬) মাসে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। নির্বাচনের আগে নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে যোগ্য ও নিরপেক্ষ কর্মকর্তাদের ডিসি হিসেবে নিয়োগ দিতে চায় সরকার।

সূত্র জানিয়েছে, এবার কোনো বিতর্কিত কর্মকর্তা বা রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা রয়েছে এমন কাউকে ডিসি করা হবে না। যদি কেউ ভুয়া তথ্য দিয়ে বা গোপনীয়তা রক্ষা করে নিয়োগ পান, তবে তদন্ত সাপেক্ষে তাঁর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্প্রতি আলোচিত কর্মকর্তা মো. সরওয়ার আলমকে সিলেটের ডিসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ভোলাগঞ্জ ও জাফলং এলাকায় পাথর লুটপাটের অভিযোগের প্রেক্ষাপটে এ পরিবর্তন আনা হয়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ বছরের ১১ জানুয়ারি থেকে ফিট লিস্ট তৈরির কাজ শুরু করে। এর অংশ হিসেবে ২৫ তম ও ২৭ তম ব্যাচের ২৬৯ জন ডেপুটি সেক্রেটারির সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। ইতিমধ্যে ৫০ জনের বেশি কর্মকর্তাকে ফিট লিস্টে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২৮ তম ব্যাচের সাক্ষাৎকারও চলমান রয়েছে।

বর্তমানে মাঠ প্রশাসনে ২৪ তম ব্যাচের ২৬ জন, ২৫ তম ব্যাচের ২৫ জন এবং ২৭ তম ব্যাচের ১২ জন কর্মকর্তা ডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

২০২৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বর একযোগে ৬১ জেলায় ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। ওই সময় ১০৮ জনের ফিট লিস্ট থেকে নিয়োগ করা হলেও তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। অনেক কর্মকর্তা ‘বঞ্চিত’ হওয়ার অভিযোগ তোলেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (নিয়োগ, পদোন্নতি ও বদলি) এরফানুল হক জানিয়েছেন, ডিসি নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। জনপ্রশাসন কমিটি সময়সূচি নির্ধারণ করবে, তবে আমরা শিগগিরই নিয়োগ আশা করছি।

এ বছর সরকার আগের বিতর্কিত নির্বাচনে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ২১ সাবেক ডিসিকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে। আবার ৪৩ জনকে ওএসডি করা হয়েছে। যাদের চাকরির অভিজ্ঞতা ২৫ বছরের কম, তাদের ওএসডি করা হয়েছে; আর যাদের বেশি, তাদের বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে ফেব্রুয়ারিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন সব জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছিলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালনে আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে।

প্রশাসন বিশ্লেষকরা বলছেন, সৎ ও দক্ষ কর্মকর্তাদের ডিসি হিসেবে নিয়োগ দিলে শুধু নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতাই বাড়বে না, প্রশাসনিক স্থিতিশীলতাও ফিরে আসবে।