সম্প্রতি সৌরজগতে প্রবেশ করা এক বিরল আন্তঃনাক্ষত্রিক বস্তু নিয়ে ব্যাপক জল্পনা তৈরি হয়েছে। হার্ভার্ডের একজন পদার্থবিজ্ঞানী আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, মহাকাশের এই আগন্তুক সাধারণ কোনো ধূমকেতু নয়, বরং এটি পারমাণবিক শক্তিতে চালিত কোনো মহাকাশযান হতে পারে।

সৌরজগতে রহস্যময় আগন্তুক, বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণে ধরা পড়ল এই অস্বাভাবিক বস্তুটি। ছবি: নাসা, ইএসএ।

চলতি বছরের জুলাই মাসের শুরুতে চিলির অ্যাটলাস টেলিস্কোপের মাধ্যমে ‘থ্রিআই/অ্যাটলাস’ নামের বস্তুটি প্রথম শনাক্ত করা হয়। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার তথ্য অনুযায়ী, এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো আমাদের সৌরজগতে কোনো আন্তঃনাক্ষত্রিক বস্তুর প্রবেশের ঘটনা পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হলো।

নাসা প্রাথমিকভাবে এটিকে একটি ধূমকেতু হিসেবে চিহ্নিত করলেও হার্ভার্ডের পদার্থবিজ্ঞানী ড. আভি লোয়েব এর কিছু অস্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেছেন। তিনি জানান, বস্তুটির পেছন দিকের বদলে সামনের দিকে এক অপ্রত্যাশিত ঔজ্জ্বল্য দেখা গেছে, যা বেশ আশ্চর্যজনক। চলতি সপ্তাহে নিজের একটি ব্লগ পোস্টে লোয়েব লিখেছেন, সূর্যের আলো প্রতিফলিত হয়ে বা ধূমকেতুর মতো গ্যাস নিঃসরণের মাধ্যমে এই ঔজ্জ্বল্য তৈরি হওয়া সম্ভব নয়।

এর পরিবর্তে তিনি দুটি সম্ভাবনার কথা বলেছেন। প্রথমত, ‘থ্রিআই/অ্যাটলাস’ হয়তো নিজেই পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করে আলো তৈরি করছে। দ্বিতীয়ত, এটি হতে পারে পারমাণবিক শক্তিতে চালিত একটি মহাকাশযান এবং এর সামনের পৃষ্ঠে জমে থাকা মহাজাগতিক ধূলিকণা থেকে এই আভা সৃষ্টি হচ্ছে। তবে তিনি স্বীকার করেছেন, এটিকে মহাকাশযান হিসেবে প্রমাণ করতে আরও শক্তিশালী তথ্যপ্রমাণ প্রয়োজন।

ড. লোয়েব অন্যান্য প্রাকৃতিক শক্তির উৎসগুলোও বাতিল করে দিয়েছেন। তার মতে, আদিম কৃষ্ণগহ্বর থেকে মাত্র ২০ ন্যানোওয়াট শক্তি উৎপন্ন হতে পারে, যা খুবই দুর্বল। মহাবিষ্ফোরণের ফলে সৃষ্ট তেজস্ক্রিয় খণ্ড পাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত বিরল। এছাড়া, মহাজাগতিক গ্যাস ও ধূলিকণার সঙ্গে ঘর্ষণের ফলে তাপ উৎপন্ন হওয়ার বিষয়টিও ভরবেগ ও ঘনত্বের সীমাবদ্ধতার কারণে অসম্ভব।

এসব বিষয় বিশ্লেষণ করে লোয়েব বলছেন, এর সবচেয়ে সহজ ব্যাখ্যা হলো বস্তুটির কেন্দ্রে একটি শক্তিশালী শক্তির উৎস রয়েছে। পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এর গিগাওয়াট স্তরের উজ্জ্বলতা অর্জনের সবচেয়ে স্বাভাবিক উপায় হলো পারমাণবিক শক্তি।

আনুমানিক ২০ কিলোমিটার প্রশস্ত এই বস্তুটি নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটন শহরের চেয়েও বড়। এর গতিপথও বেশ অস্বাভাবিক। লোয়েব জানান, সৌরজগতে বিভিন্ন দিক থেকে প্রবেশ করা প্রতি ৫০০টি বস্তুর মধ্যে মাত্র একটির কক্ষপথ গ্রহগুলোর সঙ্গে এত নিখুঁতভাবে মিলে যেতে পারে। মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির কেন্দ্র থেকে আসা এই বস্তুটি মঙ্গল, শুক্র এবং বৃহস্পতির কাছ দিয়ে যাবে, যা আরও একটি অবিশ্বাস্য কাকতালীয় ঘটনা।

নাসার তথ্যমতে, আগামী ৩০ অক্টোবর বস্তুটি সূর্যের সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে পৌঁছাবে। তখন সূর্য থেকে এর দূরত্ব থাকবে প্রায় ১৩ কোটি মাইল।

ড. লোয়েব বলেন, ‘যদি এটি প্রযুক্তিগতভাবে তৈরি কোনো বস্তু হিসেবে প্রমাণিত হয়, তবে তা মানবজাতির ভবিষ্যতের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। তখন আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে এর প্রতিক্রিয়ায় আমরা কী করব।’

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.