আর্জেন্টিনায় ফুটবল মাঠে ভয়াবহ সংঘর্ষ, ম্যাচ পরিত্যক্ত

আর্জেন্টিনার বুয়েন্স আয়ার্সের একটি স্টেডিয়াম ফুটবল নয়, বরং সমর্থকদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী এক সংঘর্ষের রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল। কোপা সুদামেরিকানার শেষ ষোলোর এই ম্যাচে স্বাগতিক ক্লাব ইন্ডিপেনডিয়েন্তে এবং চিলির ইউনিভার্সিদাদ দে চিলের মধ্যকার খেলাটি সহিংসতার কারণে মাঝপথেই বাতিল করতে বাধ্য হন রেফারি।

এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার পর একে অপরের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে দুই ক্লাব কর্তৃপক্ষ। চিলির ক্লাব ইউনিভার্সিদাদ দে চিলের অভিযোগ, তাদের সমর্থকদের ওপর স্বাগতিক দলের দর্শক ও স্থানীয় পুলিশ ‘বর্বরোচিত হামলা’ চালিয়েছে। তাদের মতে, এই রাতটি ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সহিংস অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। অন্যদিকে, আর্জেন্টাইন ক্লাব ইন্ডিপেনডিয়েন্তে এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, সফরকারী সমর্থকরা ম্যাচ শুরুর আগেই স্টেডিয়ামের সিসিটিভি ক্যামেরা ও টয়লেট ভাঙচুর করে এবং আতশবাজি নিক্ষেপের মাধ্যমে সহিংসতার সূত্রপাত ঘটায়।

দুই পক্ষের এই সংঘর্ষে ১৯ জন দর্শক আহত হন, যাদের দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে ১৬ জন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরলেও মস্তিষ্কে গুরুতর আঘাত পাওয়া একজনকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল, যদিও তার অবস্থা এখন উন্নতির দিকে। চিলির ক্লাবটি আরও অভিযোগ করেছে, তাদের শতাধিক সমর্থককে আটক করা হলেও স্বাগতিক দলের কোনো হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। এমনকি তাদের টিম বাসের জানালাও ভাঙচুর করা হয়।

জানা যায়, ম্যাচের বিরতির সময় চিলিয়ান সমর্থকরা নিচের গ্যালারিতে থাকা স্বাগতিক সমর্থকদের দিকে বিভিন্ন বস্তু ও একটি স্টান গ্রেনেড ছুড়ে মারলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এর প্রতিক্রিয়ায় খেলার দ্বিতীয়ার্ধে ইন্ডিপেনডিয়েন্তের সমর্থকরা সফরকারী সমর্থকদের গ্যালারিতে ঢুকে হামলা চালালে খেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ সময় আতঙ্কে অনেক চিলিয়ান সমর্থক পালাতে বাধ্য হন। ইন্ডিপেনডিয়েন্তের সমর্থকরা চিলির খেলোয়াড়দের ওপর হামলার জন্য ড্রেসিংরুমেও ঢোকার চেষ্টা করেছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ফুটবলে সহিংসতার কোনো স্থান নেই। খেলোয়াড় ও সমর্থকসহ সবার জন্য একটি ভয়মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই বর্বরোচিত ঘটনার জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনবে।